গোয়াল ঘরে বাস নিহত এএসআই’র পিতা-মাতার! ঘর নির্মাণ করে দিলেন সাতক্ষীরার এসপি

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বাশ পেটে ঢুকে নিহত এএসআই শাহ জামালের মা-বাবাকে ঘর নির্মাণ করে দিলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।

যশোরের শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে শাহ জামালের পিতা-মাতার কাছে বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্বোধন শেষে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

পরে তিনি শাহ জামালের কবর জিয়ারত করেন।

বসতঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শাহাজামালের মা-বাবা।

এসময় পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আশাশুনি থানায় কমরত অবস্থায় শাহ জামাল সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি। বিশেষ করে তার পিতা-মাতার বাসযোগ্য কোন বসত বাড়ি ছিলনা। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের উদ্যোগে শাহ জামালের পিতা-মাতার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। মানবিক কারণে এ ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।’

দায়িত্বপালনকালিন সময়ে যেসব পুলিশ সদস্য বিভিন্ন দূর্ঘটনায় মারা গেছেন, তাদের পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান সাতক্ষীরার এই পুলিশ সুপার।

নিহতের পিতা সুলতান বিশ্বাস জানান, ‘গরুর গোয়ালে তিনিসহ তার স্ত্রী বসবাস করতেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান মারা যাওয়ার পরে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। তার এই দুর্বিসহ দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে খুবই প্রশংসনীয়।’

নিহতের মা হাওয়া বিবি জানান, ‘একদিকে ছেলেকে হারানোর বেদনা অন্যদিকে অভাবের তাড়নায় তারা দিশেহারা। এমন সময়ে মোস্তাফিজ আমার বড় সন্তানের দায়িত্ব পালন করেছে। আজ থেকে সে আমার বড় সন্তান। আমি মায়ের মত তার সফলতা কামনা করি।’

প্রসঙ্গত, ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে আশাশুনি থানার বুধহাটা বাজারে পেট্রল ডিউটি সেরে থানায় যাওয়ার পথে চাপড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ট্রাকে রাখা বাশ পেটে ঢুকে গুরুতর আহত হন শাহ জামাল। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহ জামালের গ্রামের বাড়ি শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে।

তার ৮ বছর বয়সী রাফি নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে সন্তান সম্ভবা।

তাদের মাঠে কোন জমি-জমা নেই। শাহ জামালের ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম কৃষি শ্রমিক। শাহ জামালের পিতা-মাতা গোয়াল ঘরের এক পাশে বসবাস করতেন।

তাদের এই দুরবস্থা দেখে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান নিজ উদ্যোগে দু’কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঘর নির্মাণ করে দেন।