দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যা জোয়ারের প্রভাবে বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ৷ এতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চল ও নগরীর বস্তি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি জোয়ারের পানির সাথে গত দুই দিন বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কীর্তনখোলা নদীর পানিও মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী নিচু এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল নগরের রসুলপুর, ভাটিখানা, সাগরদী, ধানগবেষণা রোড, জিয়ানগর, ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, স্টেডিয়াম কলোনি ও সদর রোড, সাংবাদিক মাঈনুল হাসান সড়ক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। কীর্তনখোলার সঙ্গে যুক্ত ড্রেন দিয়ে এসব এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে।

এছাড়াও জোয়ারের পানিতে বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। ড্রেনের পানি উপচে পড়ে শহরের রাস্তাঘাটে প্রবেশ করছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় কীর্তনখোলা নদীর পানি বরিশাল বন্দর পয়েন্ট বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপরদিকে বিভাগের অপর ৫টি নদীর ৯টি পয়েন্টে সোমবার বিপৎসীমা অতিক্রম করে। আজও ওই ৫ নদীতে অস্বাভাবিক পানি প্রবাহ ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিটার গেজ রিডার আব্দুর রহমান জানান, কীর্তনখোলার নদীর পানির বিপৎসীমা ২.৫৫ মিটার। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ২.৬০ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে যায়। এতে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। তবে ৬ ঘণ্টা পর ভাটার সময় পানি নেমে যায়।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে জোয়ারের প্রভাব কমে গেলে পানি মেনে যাবে এবং এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অপরদিকে জোয়ারের পানির সাথে গত দুই দিন বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে বরিশাল আবহাওয়া অফিস।

এদিকে আমবশ্যায় সৃষ্ট জোয়ারের প্রভাবে ভোলায় মেঘনার পানি বেড়ে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে বাঁধের বাইরের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। মেঘনার তীরবর্তী এবং মূল ভূ-খণ্ডের বাইরের দ্বীপচরে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ফুট পানি বেড়েছে।

এতে গঙ্গাকীর্তি, বলরামসুরা, মদনপুর, মাঝের চর, কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর পাতিলা, কলাতরীর চর, কচুয়াখালীর, মনপুরা, চর যতিন, চরজ্ঞান, সোনার চর, চর শাহজালালসহ অন্তত ২০টি দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বসতঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

এছাড়াও সুগন্ধা, বিষখালী,আড়িয়াল খাঁসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।