পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে সমৃদ্ধির শিক্ষা কেন্দ্র

দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে সহায়তা করছে

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড বলা হয়। একটি উন্নত ও আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে সর্বজনীন শিক্ষা একটি অপরিহার্য উপাদান।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ঢাকা-এর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের ১১০টি সহযোগী সংস্থায় ১৯৮টি ইউনিয়নে ৫৯৮৫টি শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে ১,৬১,৯৫০ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্কুলে প্রদত্ত বাড়ীর পাঠ তৈরীতে সহায়তা করেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উদ্দীপন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ঢাকা-এর আর্থিক সহায়তায় সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতাভূক্ত দরিদ্র পরিবারের যে সকল সন্তান শিশু শ্রেনীতে পড়াশুনা করছে বা এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি এবং স্থানীয় সরকারী ও সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম থেকে ২য় শ্রেনীতে অধ্যয়নরত তাদের জন্য ৩২টি বৈকালিক শিক্ষাদান কেন্দ্র পরিচালনা করছে।
সমৃদ্ধির শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রের শিক্ষাদানের মাধ্যমে ইউনিয়নের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়া রোধ হয়েছে, বিদ্যালয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ভীতি দূর হয়েছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়নও হয়েছে বলে মত দিয়েছেন এলাকার সাধারণ জনগণ।

শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য সংস্থা থেকে বিনামূল্যে চট, ব্ল্যাকবোর্ড, চক ডাস্টার, হাজিরা খাতা ইত্যাদি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্র ২০-৩০জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে পরিচালিত হয়। শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকাগণ সপ্তাহে ৫দিন (শুক্র-শনিবার ব্যতীত) বিকাল ৩:০০-৫:০০ পর্যন্ত দুই ঘন্টা পাঠদান করান। তারা মূলত পরবর্তী দিনের স্কুলের পড়া তৈরিতে সহায়তা করেন। শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রদত্ত নির্ধারিত বই ব্যবহার করা হয়। পড়া-লেখার পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান, সৃজনশীল কাজ, নৈতিক পাঠ, ছবি আঁকা, নাচ গান, কবিতা আবৃত্তি ও সাধারণ আদব-কায়দা শেখানো হয়। ইউনিয়নের উপযুক্ত শিক্ষিত মহিলাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পর শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। শিক্ষিকাকে প্রতিমাসে সম্মানী হিসেবে সংস্থা থেকে ১৫০০টাকা প্রদান করা হয়। প্রতিটি শিক্ষা কেন্দ্রের ভাড়া বাবদ ৩০০টাকা প্রদান করা হয়। অভিভাবকগণ শিক্ষার্থী প্রতি মাসিক সর্বোচ্চ ৪০টাকা পর্যন্ত শিক্ষিকাকে সম্মানী দিয়ে থাকেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে বৈকালিক শিক্ষাদান কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়। সমৃদ্ধি কর্মসূচির কর্মকর্তাগণ তাদের পরিকল্পনামাফিক নিয়মিত শিক্ষাকেন্দ্র পরীবীক্ষণ করে থাকেন।