সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে

নদী খননের বালি কৃষি জমিতে রেখে বিক্রির অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের নতুন চয়রা নামক স্থানে হুরাসাগর নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধ ভাবে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের ফসলি জমি ভরাট করে দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে করীম গ্রুপ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
একইসাথে জায়গা সমন্বয়কারীকে বিলাসবহুল গাড়ি (উপহার) দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, করিম গ্রুপ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের খনন কাজের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ও মাহবুব এই কাজের সাথে সরাসরি যুক্ত থেকে নাগডেমরার আইনুল হকের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী সাথিয়া উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের দেড় থেকে দুইশত বিঘা আবাদি জমি জোড় করে ঘেরাও দিয়ে প্রতি শতক বাবদ ৬/৭ হাজার করে টাকা নেয়ার ও বালু বিক্রির অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। চক্রটি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হুরাসাগর নদী থেকে বালু তুলে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাইপ টানানোর নামে ইতোমধ্যেই অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেইসাথে রাতের অন্ধকারে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বড় বড় স্তুপ করে ড্রাম ট্রাক দিয়ে দেদারসে আশপাশের এলাকায় বালি বিক্রি করে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে কেউ কেউ।

এ বিষয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও দেদারসে চলছে বালু বিক্রি।
এতে করে একদিকে যেমন সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে জোড় করে অসহায় কৃষকদের ফসলি জমি কেড়ে নিয়ে চরম দূর্বিসহ করে তুলবে কৃষকদের জীবন।

শাহজাদপুর উপজেলার রূপবাটি, চয়রা ও পার্শবর্তী এলাকা ঘুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে ও অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় শাহজাদপুর করতোয়া ও ফুলজোড় নদী খনন করা হচ্ছে। বালু ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী সরকারি ড্রেজিংয়ের বালু শুধু সরকারি সম্পত্তি, স্কুল, কলেজ, মসজিদ-মন্দির বা খেলার মাঠ ভরাটের জন্য ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এই বালি পার্শ্ববর্তী সাথিয়া উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়নের আয়নুল হকের তত্তাবধানে করিম গ্রুপ নামের প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত মাহবুব ও রবিউল সাথিয়া উপজেলার ভিটাপাড়া এলাকায় প্রায় কৃষিজমি জবরদখল করে ও জোরপূর্বক লাখ লাখ সেএফটি বালু স্তুপ করার পায়তারা করছেন।
এছাড়াও এই চক্রটি চয়রাতে ৩ থেকে ৪ টাকা সেএফটি হিসাবে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু রাতের আধারে বাল্কহেডের মাধ্যমে বিক্রি করছে চক্রটি। একই সঙ্গে এলাকা থেকে নদীর মাটি ভেকু মেশিনের মাধ্যমে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বেড়া উপজেলার নাগ ডেমরা ইউনিয়নের আয়নুল হক বলেন, আমি করিম গ্রুপ নামের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বালি নিয়ে এলাকার মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছি আর এ বালি বাবদ প্রতি শতক ৬ হাজার করে টাকাও দিচ্ছি। বৈধ-অবৈধের বিষয়টি তারাই ভালো বলতে পারবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, বালু বিক্রির বিষয়ে আমি অবগত নই।