নরসিংদীর পশুর হাটে উপচে পড়া ভিড়, মানছে না স্বাস্থ্যবিধি

চারদিকে মানুষ আর মানুষ। গরু-ছাগলের চেয়ে কয়েক গুন বেশি মানুষের উপস্থিতি। প্রায় কয়েক হাজার গরু আনা হয়েছে বিক্রির জন্য। এসব গরুর চারপাশে কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার জটলা। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কেউ-ই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব, মানার উপায়ও নেই। ক্রেতাদের সঙ্গে বেশ কিছুসংখ্যক শিশুরও দেখা মেলে।

এ চিত্র শনিবার (১০ জুলাই) নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পুটিয়া কোরবানির পশুর হাটের।

কয়েক দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক স্থানে কোরবানির গরু-ছাগলের হাট বসেছে। এ রকম একটি হাট হলো নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পুটিয়া হাট।

এভাবে অবাধে ঘুরে বেড়ানোর কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ওই হাটের অন্যতম উদ্যোক্তা হাশিমপুর এলাকার মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সারা দিনব্যাপী কোরবানির পশুর হাট বসানো হয়েছে। করোনার কারণে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। কিন্তু মানুষের মধ্যে নেই কোন গণসচেতনতা।’

এদিকে পুটিয়া গরুর হাট বাজারে সংবাদ সংগ্রহে গেলে আমাদের সংবাদকর্মীকে বাজার কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসে নিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান।
একপর্যায়ে তারা ব্যর্থ হয়ে বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বর্তমানে কোথাও মানা হচ্ছে না। তাই আমরা এই ঐতিহ্যবাহী হাট বসিয়েছি। তাছাড়া আমরা ইউএনও স্যারের নির্দেশ নিয়ে এই বাজার চালু করেছি।’

বেলা দেড়টার দিকে ওই হাট ঘুরে দেখা যায়- ‘সেখানে ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের হাজারেরও বেশি গরু বিক্রির জন্য সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা কোনো সামাজিক দূরত্ব না মেনেই গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দরাদরি করছেন। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতারই মুখে মাস্ক নেই। বেশ কিছু ক্রেতার সঙ্গে এসেছে তাঁদের শিশুসন্তানেরাও। এসব শিশুর মুখেও মাস্ক নেই। কয়েকজন ক্রেতাকে হাত ধরাধরি করেও ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে।’

পুটিয়া এলাকার সোবাহান মিয়া তাঁর দুটি অল্প বয়সী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাটে এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘গরু কিনার লইগা হেই সকালে এনো আইছি। একটার দরদাম করছি। দাম ৭০ হাজার টেয়া। তয় দামটা কিছুডা বেশিই মনে অইল।’

ছেলেদের কেন নিয়ে এসেছেন, করোনাকে ভয় পান না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমনিতেই গরু দেহনের লইগা এনো আইছে। হাট দেহনের ওগো খুব শখ।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদারকি জোরদার করা হবে।’