নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার পা দ্বিখন্ডিত করল প্রতিবেশী

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনায় ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে পা দ্বিখন্ড করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার পুরো পরিবারের ওপর নির্যাতন চালায় হামলাকারীরা।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী আরমান হোসেন বাদী হয়ে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে, গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কাদিরহানিফ ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামে এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ৬ নভেম্বর এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে একটি মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মাহফিল চলাকালে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে গোপীনাথপুরের আরমানের ছোট ভাই আরাফাতের সাথে প্রতিবেশী মাসুমের (৩৮) ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে আরাফাতকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে মারধর করতে উদ্যত হয় মাসুম। বিষয়টি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানালে মাসুম ও তার পরিবারের সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে মাসুম তার ভাই রিপন, ইসমাইল সহ ৪-৫জন সন্ত্রাসী নিয়ে লোহার রড, ধারালো ছেনী, এসএস পাইপ এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আরাফাতের বাড়িতে হামলা চালায়। পরবর্তীতে অশ্লীল ভাষায় গালমন্ড করে ভাংচুর চালায়। হামলার শিকার ব্যক্তিরা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক উল্যার পরিবারের সদস্য।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে আরাফাতের নানী বৃদ্ধা রাজিয়া বেগম (৮৫) হামলাকারীদের গালমন্দ করতে নিষেধ করলে মাসুম লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার বাম পায়ের থাইয়ের হাঁড় ভেঙ্গে দ্বিখন্ডিত করে দেয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তার মেয়ে আকলিমা বেগমকে (৪৫) পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় এবং তার স্বামী নুর আলমকে (৬০) বেধড়ক পিটিয়ে চোখের নিচে আঘাত করে। তাদের ছেলের বউ সুইটিকে মারধর করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। হামলাকারীরা তাদের ১ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও নগদ ৫ হাজার ৫শ’ আশি টাকা ছিনিয়ে নেয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার অভিযুক্ত মাসুম মিয়ার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায় নি।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে। আহত বৃদ্ধা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।