পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নির্বাচিত প্রচার-প্রচারণা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ফেস্টুন টাঙিয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবহার্য ঢোল পিটিয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছেন।

শনিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কে এই প্রচার-প্রচারণার কাজ চালিয়েছেন। এ ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ আর হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, প্রথমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোমলমতি শিক্ষর্থীদের একত্রিত করেন। এরপর দেবনগড় ইউনিয়নের কলেজপাড়া থেকে বাসামোড়, এরপর বাসামোড় থেকে শিবচন্ডি, এরপর শিবচন্ডি থেকে নন্দগছ, এরপর নন্দগছ থেকে মাগুরমারী চৌরাস্তা বাজার, এরপর মাগুরমারী চৌরাস্তা থেকে দেবনগড় বাজার, এরপর দেবনগড় থেকে ময়নাগুড়ী।

এরপর ময়নাগুড়ী থেকে স্লোগান দিতে দিতে আবার ভজনপুর বিদ্যালয় মাঠে আসলে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হয় শিক্ষার্থীদের। পরে পূণরায় বিদ্যালয় মাঠ থেকে করতোয়া সেতুর উপর দিয়ে ভজনপুর ইউনিয়নের ভজনপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গনাগছ, কুকুরমোহা, ভদ্রেশ্বর ও গিতালগছ এর উদ্দেশ্যে ঢোল পিটিয়ে প্রচার-প্রচারণ শুরু করেন।

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা প্রচার-প্রচারণার কাজ চালিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান।

আরোও জানা যায়, মজিবর রহমান প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং তেঁতুলিয়া উপজেলা পাথর-বালি ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি।

উল্লেখ্য যে, গত বছরের জানুয়ারিতে তিন দিন ব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধের প্রস্তাব আসে। এতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধে ডিসিদের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে সরকার।

ওই সময় ঝিনাইদহের ডিসি মনিরা বেগম প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, বিধিমালা হলে শিক্ষকতার পাশাপাশি ঠিকাদারি, সাংবাদিকতাসহ একাধিক পেশায় যুক্ত থাকার প্রবণতা ঠেকিয়ে শিক্ষকদের পাঠদানে আন্তরিক করা যাবে। বিধিমালা বা নীতিমালা থাকলে শিক্ষকতা পেশায় থেকে রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণে নিরুৎসাহিত করাও সম্ভব।

অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষক ভোটে দাঁড়িয়েন আমরা আমাদের পিতা-মাতাকে বলব তাকে ভোট দেওয়ার জন্য। আপনারা (শিক্ষার্থীরা) কেন এই ভাবে ঢোল পিটিয়ে বেড়াচ্ছেন? এমন প্রশ্নে তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) বলেন, তাদের প্রধান শিক্ষক ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাই তাদেরকে ঢোল পিটিয়ে এইভাবে প্রচার করতে বলেছেন।

ভজনপুর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান বলেন, ‘আপনার যা করণীয় আপনি (সাংবাদিক) করেন, আমি ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে প্রচার-প্রচারণা করতেছি আপনি ছাড়ে দেন বাংলাদেশ দেখুক।’ তিনি তার এ কথার ভিত্তিতে প্রমাণ করছেন ক্ষমতার অপব্যবহারে নিজেকে গর্জিয়ে উঠেছেন।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আমি রাস্তায় বাহিরে রয়েছি আপনার কথা বুঝা যাচ্ছে না। আপনি(সাংবাদিক) আগে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ফোন দেন।

এরপর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলীর মুঠোফোনে একের অধিক কল হলেও রিসিভ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বির সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে কল দিলে কলটি রিসিভ হয়নি।