ট্রাফিক কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ এবং দোকানপাট ভাঙচুর

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের জলসা বন্ধের দাবীতে পুলিশ মুসল্লি সংর্ঘষ

আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের জাতীয় সালানা জলাসাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাধারণ মুসল্লি ও পুলিশের সংর্ঘষে আরিফ (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন এবং এ ঘটনায় আরও প্রায় ৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) বাদ জুম্মার সালাতের পর আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবীতে পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে চৌরঙ্গি মোড়ে একত্র হতে থাকে।

নিহত আরিফ পঞ্চগড় জেলা পৌরসভার ডোকরো পাড়া এলাকার মোঃ ফরমান আলি ড্রাইভারের একমাত্র ছেলে।
আরিফ জুম্মার সালাতের পর বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেয় পুলিশের বাধার মূখে রাবার গুলিতে সে গুরুত্বর আহত হলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেন। পরে রংপুর নেওয়া পথে এম্বুলেন্সে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার জানান।

এদিকে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়ের ডাকে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে নামাজ শেষে চৌরঙ্গি মোড়ে মিছিল নিয়ে এবং বিভিন্ন ইসলাম ধর্মীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে চৌরঙ্গি মোড়ে আসলে পুলিশ তাদের বাধা প্রদান করে। এক পর্যায় সে সময় পুলিশের সাথে সংর্ঘষ শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ হলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর হামলা করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে ।

এসময় পুলিশ পাল্টা জবাবে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে করে প্রায় ৪০ জন মুসল্লিসহ পুলিশ গুরুত্বর আহত হন। এদের বাকি মুসল্লীরা উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবি যোগ দেয়।

বিক্ষোভ মিছিল চলাকালিন সময়ে পঞ্চগড় বাজারে আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের দোকান ঘর আহমদ নগর তেলিপাড়া এলাকার আহমদিয়াদের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও পুলিশের গাড়ি ভাংচুর এবং মহাসড়কে থাকা ট্রাফিক অফিস জ্বালিয়ে দেয়। শহরের বিভিন্ন এলাকার অলিগলি অবস্থান থেকে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সাথে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াও গত বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ৪ ঘন্টা জেলা শহরের চৌরঙ্গি পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়।

বর্তমানে আহমদনগর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, পঞ্চগড় শহরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।