পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম শরীফের বৈশিষ্ট্য

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য।সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্তুরুদ শরীফ ও সালাম।

১। পবিত্র মুহররম শরীফ মাসটি চারটি হারাম বা পবিত্র মাসের মধ্যে অন্যতম মাস।

২। এ মাসটি বিশেষভাবে সম্মানিত।

৩। পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনটি পবিত্র মুহররম শরীফ মাসের দশ তারিখ বলে এর নাম পবিত্র আশূরা শরীফ হয়েছে।

৪। অন্য রেওয়ায়েত মতে উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে দশটি বুযূর্গ দিন উপহার দেয়া হয়েছে উনার মধ্যে পবিত্র আশূরা শরীফ দিনটি দশম স্থানীয়। এ কারণেই নাম পবিত্র আশূরা শরীফ রাখা হয়েছে।

৫। আবার কারও কারও মতে এ দিনটিতে যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় দশজন নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে দশটি ভিন্ন ভিন্ন রহমত বর্ষণ করেছেন, তাই নাম পবিত্র আশূরা শরীফ হয়েছে।

৬। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এই দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা এই দিনেই সংঘটিত হয়।

৭.এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন এবং সৃষ্টির সমাপ্তি বা ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে এই দিনে।

৮.আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামূল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়ীন, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত প্রায় সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোনো না কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা এই দিনে সংঘটিত হয়েছে।

৯. এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মর্যাদা, সম্মান ও খুছুছিয়ত ও হাবীবুল্লাহ হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে আশূরা শরীফ উনাকে সম্মানিত করা হয়।

১০. এ দিন হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার দোয়া কবুল করা হয় এবং উনার ইছমত ঘোষণা করা হয়।

১১. এই দিনে মহান আল্লাহ পাক রব তা’য়ালা তিনি হযরত ইদরীস আলাইহ্সি সালাম উনাকে সম্মানিত উঁচ্চ স্থানে/আকাশে তুলে নেন।

১২. এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নূহ আলাইহ্সি সালাম উনার নৌকা বা কিস্তি মুবারককে জুদী পাহাড় মুবারকে ভিড়িয়েছিলেন।

১৩. এই দিনে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ হয় এবং এই দিনে উনাকে খলীল উপাধি প্রদান করা হয় এবং উনাকে নমরূদের অগ্নিকা- থেকে বের করে আনা হয়। অর্থাৎ হিফাজত করা হয়।

১৪. এই দিন হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়, দোয়া কবুল করা হয় এবং উনার পুত্র হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ব প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়।

১৫. এই দিনে হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম তিনি অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করেন।

১৬. এই দিনে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি কথা বলেছিলেন এবং তাওরাত শরীফ নাযিল করেছিলেন। এই দিনেই হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও উনার সম্প্রদায় লোহিত সাগর পার হয়েছিলেন এবং ফিরাঊনকে সদলবলে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।

১৭. এই দিনে হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম তিনি মাছ সম্প্রদায়কে সুস্থতা দান করে পুনরায় যমীনে তাশরীফ এনেছেন।

১৮. এই দিনে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার দোয়ার প্রেক্ষিতে উনাকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়।

১৯. এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি দুনিয়া সৃষ্টি করেন এবং এই দিনেই সৃষ্টির সমাপ্তি বা ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।

২০. এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম যমীনে বৃষ্টি নাযিল করেন।

২১. এই দিনেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি রহমতসহ সর্বপ্রথম যমীনে নাযিল হন।

২২. আর এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম পৃথিবীতে রহমত বর্ষণ করেন।সঙ্গত কারণেই এ দিনটি সবার জন্য এক মহান আনুষ্ঠানিকতার দিন, রহমত, বরকত, সাকীনা, ফযীলত ও মাগফিরাত হাছিল করার দিন।