ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঈদের দিনে যবুক ছুরিকাঘাতে নিহত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় শাহজাহান (২০) নামে এক যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।নিহতের বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে।এ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের উজানচর নওপাড়া (কুঢের চর)গ্রামে।

নিহত শাহজাহান দিনমজুর নূরুল ইসলামের পুত্র। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। ছুটি পেয়ে ঈদের আগের দিন বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি এসেছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুর রশিদ মাস্টারের পুত্র শামীম ও একই এলাকার অনুকূলের পুত্র হৃদয়সহ তার দলবল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে কিশোর গ্যাং মাদকসেবন করে আসছিল।

এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না বলে অভিযোগ রয়েছে।বুধবার উচাখিলা বাজারে আব্দুর রশিদ মাস্টারের পুত্র শামীমের নেতৃত্বে মোড়ল বাড়ির লাল মিয়া ও অপর এক ব্যক্তিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারধর করে। এ নিয়ে রাতে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

বৃহস্পতিবার ঈদগাহের মাঠে নামাজের সালাম ফিরানোর পরপরই হৈচৈ শুরু হয়। এ সময় ঈদগাহের সামনে শামীম ও তার দলবল শাহজাহানকে মারধর করে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে শাহজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.আহমেদ জাবির।

ডাঃ জাবির আরও জানান, নিহতের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্নসহ তার পেটের ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে।গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত সুপার সুমন মিয়া, ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মাজেদুর রহমান ও ডিবি পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এ ঘটনায় আব্দুল ওয়াদুদের পুত্র আব্দুল কাইয়ুম জিহানকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীও হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মাজেদুর রহমান জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সরেজমিন নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান হত্যার শোকে মা ফিরোজা খাতুন, বাবা নূরুল ইসলাম নিজ ঘরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছে এবং বিলাপ করে বলছে আমার নিষ্পাপ পুত্র শাহজাহানকে ঈদের মাঠ থেকে ইমাম সাহেবের পিছন থেকে ধরে নিয়ে শামীম, সাদেক, হাদী, মানিক মারধর করে চাকু দিয়ে হত্যা করেছে।

যারা আমার ছেলেকে মারধর থেকে ফিরাইতে চাইছে তাদেরকেও মারধর করেছে, আমি শুইন্যা গেলে আমারেও আটকাইছে। আমি আমার পুত্রের খুনিদের ফাঁসি চাই।নিহতের বাবা-মা জানান, উচাখিলা হাই স্কুল থেকে শাহজাহান এসএসসি পাশ করছে। অভাবের তারণায় আর পড়াইতে পারি নাই। পরে ঢাকায় একটা গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ নেয়।