পাবনার ঈশ্বরদীতে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক

প্রকৃতিকে বিদায় জানাচ্ছে শরৎ। উঁকি দিচ্ছে হেমন্ত। ভোরে দেখা মিলছে কুয়াশার। হেমন্তের পরেই শীতকাল। আগাম শাক-সবজি বাজারে তুলতে পারলে বেশী টাকা লাভ হবে-এই প্রত্যাশায় সবজি চাষে কৃষকদের মাঝে ধুম পড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজি ক্ষেত বপনের জন্য উপযোগী হয়ে উঠেছে। তাই নারী ও পুরুষ কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। আগাম ফুলকপি, পাতাকপি, মূলা ও শিম প্রায় মাসখানেক হলো বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আগাম এসব সবজি কৃষকরা বেশী দামে বিক্রি করতে পারায় লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। এর মধ্যে কিছু জমিতে আগাম সবজি চাষ হয়েছে। উপজেলার মুলাডুলি মধ্যপাড়া, বাঘহাছলা, সাহাপুুর,ভাড়ইমারী, নওদাপাড়া, মুনসিদপুর, মিরকামারীসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। সকাল-সন্ধ্যা সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ চারা ও বীজ বপনে ব্যস্ত। মুলাডুলি ইউনিয়নের গ্রামগুলোয় শিমের চাষাবাদ চলছে। সলিমপুরের ভাড়ইমারী, নওদাপাড়া, মিরকামারী ও সাহাপুর গ্রামে গাজরের চাষ বেশি দেখা যায়। এছাড়া লক্ষ্মীকুন্ডা পদ্মার চরাঞ্চলে মুলা, ফুলকপি, টমেটো ও ধনিয়া চাষ বেশি।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে কয়েকটি গ্রামে সবজির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা সবজির চারা তুলতে ব্যস্ত, আবার কেউ কেউ ক্ষেতে সবজির চারা লাগাচ্ছেন। কেউবা নিড়ানি দিয়ে আগাছামুক্ত করছেন।

ভাড়ইমারী গ্রামের সবজি চাষি জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বীজতলা তৈরি করে চারা প্রস্তুত করেছি। এসব চারা এখন তুলে রোপণ করা হবে। আশ্বিনের শেষে অথবা কার্তিকের শুরুতে কপির চারা রোপণ করলে ২ মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে। সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছি।

মনসিদপুর গ্রামের মতিন বলেন, ‘শীতকালীন সবজি চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। সেখান থেকে চারা তুলে দুই-চারদিনের মধ্যে জমিতে রোপণ করবো। এবার ফুলকপির চারা বেশি তৈরি করেছি। ফুলকপি চাষে ভালো লাভ হয়।’

নওদাপাড়া গ্রামের মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘শীত মৌসুমে সবজি চাষের জন্য বীজতলায় চারা তৈরি করেছি। এগুলো রোপণের উপযোগী হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে রোপণ করবো। এলাকায় মূলত গাজর, মুলা, কপি এবং গ্রীষ্মকালে লিচুর ব্যাপক আবাদ হয়।’

সলিমপুর ইউনিয়নের কৃষি উপ সহকারী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নে শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। এখানে গাজর, মুলা, ফুলকপি, ওলকপি ও শিম চাষ বেশি হয়। এছাড়া টমেটো, ধনিয়া, লাল শাক, পালং শাকের ফলনও ভালো হয়। কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, ‘এখানে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়। শিম, ফুলকপি, গাজর ও মুলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়। ১৬ অক্টোবর রবি মৌসুম শুরু হচ্ছে। এখানকার কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।