ফেসবুকে সাফল্যের কথা লেখার পরেই তরুণী খুন

বছর তিনেক আগেও ঘরবাড়ি ছিল না। গৃহহীন অবস্থা থেকে কঠিন পথ পেরিয়ে কোটিপতি হয়েছিলেন তিনি। একার পরিশ্রমে দাঁড় করিয়েছিলেন নিজের ব্যবসা। সেই সঙ্গে অন্যদেরও সাফল্যের পথ খুঁজে নিতে সাহায্য করেছেন।

সেই লড়াইয়ের গল্প বলে বাকিদেরও মনোবল বাড়াতে চেয়েছিলেন। বুধবার রাতে ফেসবুকে নিজের কাহিনী লেখার কয়েক ঘণ্টার মাথায় সাত সকালে ফ্লোরিডার বাসিন্দা মাকেভা জেনকিনসকে বাড়িতে ঢুকে হত্যা করেছে এক মুখোশধারী আততায়ী।

পুলিশ জানিয়েছে, তিন সন্তানের জননী জেনকিনস ‘দ্য প্রাইম এন্টারপ্রাইজ গ্রুপ’ নামে একটি সংস্থা চালাতেন। ব্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিত ওই সংস্থাটি।

বুধবার ফেসবুকে জেনকিনস লিখেছিলেন, ‘২০১৩ সালের আগেও আমরা নিরাশ্রয় ছিলাম। সেই অবস্থা কাটিয়ে ২০১৫ সালের মধ্যে রোজগার শুরু করি আমি। রাস্তা যতই কঠিন হোক, আমি আমার মনের কথা শুনেছি এবং সেই পথেই ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। আমি মনে করি, সংকল্প ও দৃঢ়তা থাকলে কারও পক্ষেই কোনও কাজ অসম্ভব নয়।’

এই পোস্ট লেখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘনিয়ে আসে মৃত্যু। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের লোকজনের সামনেই খুন হন জেনকিনস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডার লেক ওর্থে তার বাড়ির সামনের দরজায় কড়া নাড়ে মুখোশপরা এক আততায়ী। ভিতরে ঢুকে জেনকিনসের তিন ছেলেমেয়েকে বাইরের উঠানে বেরিয়ে যেতে নির্দেশ দেয় সে। তারা ঘর থেকে বেরোতেই জেনকিনসকে গুলি করে হত্যা করে সে।

এরপর বাড়ির গাড়িটি চুরি করে তাতে চড়েই পালিয়ে যায় আততায়ী। পুলিশ জানিয়েছে, খুনির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। সে জেনকিনসকেই খুন করতে এসেছিল কিনা বা এলেও কেন এসেছিল, তা স্পষ্ট নয়। ওই আততায়ীকে খুঁজছে পুলিশ।

জেনকিনসের সংস্থা ‘দ্য প্রাইম এন্টারপ্রাইজ গ্রুপ’ থেকে উপকৃত হয়েছেন এমন অনেকেই তার মৃত্যুসংবাদে হতবাক হয়েছেন। একজন জানিয়েছেন, নতুন ব্যবসা শুরুর দিন থেকে জেনকিনসের পরামর্শ নিয়ে এগিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ধন্যবাদ জানাতে ফোন করার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই দুঃসংবাদ পেলেন।

ওই ব্যক্তি বলেন, ‘জেনকিনস আমার যে উপকার করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ বলাটা যথেষ্ট নয়। খবরটার শোনার পর থেকে বিশ্বাস করতে পারছি না।’

পুলিশের ধারণা ফেসবুকে রোজগারের কথা ঘোষণা করেই হয়ত নিজের বিপদ ডেকে এনেছিলেন জেনকিনস।