বউ বলেছিলেন, তুমিই জেতাতে পারো!

বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতবে তো? মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মঙ্গলবার তৃতীয় দিন শেষেই এই প্রশ্নটা মাথা চাড়া দেয়। বুধবার যে প্রশ্নটাকে আরো বড় করে তুলে ফেলে ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। ম্যাচটা যেন বাংলাদেশের হাত থেকে থেকে বেরই করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান সাকিব আল হাসান। ওয়ার্নারকেই প্রথম শিকার বানান। এরপর ফিরিয়েছেন স্মিথ, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, ম্যাথু ওয়েড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। ইতিহাস গড়া জয়ে নিজের পঞ্চাশতম টেস্টটা রাঙিয়েছেন সাকিব দারুণভাবে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ফিফটির পর বল হাতে দুই ইনিংসেই ৫ উইকেট করে মোট ১০ উইকেট নিয়েছেন। অবধারিতভাবে ম্যাচের নায়ক তিনি। আর বুধবার সাকিবে বাংলাদেশের ম্যাচের ফেরার মূলে তার স্ত্রী শিশির উম্মে আল হাসান। সাকিব নিজেই ম্যাচ জিতে বলে গেলেন, আগের রাতে বউই জয়ের জন্য তাতিয়ে দিয়েছিলেন তাকে!

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাকিবই দর্শকদের বলে গেছেন স্ত্রীর সেই বিশ্বাসের কথা। ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে শামিম চৌধুরীর করা প্রশ্নে নিজের অনূভূতি জানাতে গিয়ে শুধু বললেন, ‘আমি দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেছি এটা দারুণ অনূভূতি। ’ এরপর মাইক্রোফোনটা চেয়ে নিলেন। নিজের হাতে মাইক নিয়ে দারুণ খুশি সাকিব মনের আগল খুলে কথা বললেন। সব আনন্দ ভাগ করে দিলেন।

দর্শকরা যে বিশ্বাস রেখেছিলেন টাইগারদের উপর এজন্য প্রথমে দর্শকদেরই ধন্যবাদ দিলেন সাকিব, ‘ধন্যবাদ সবাইকে আমাদেরকে সাপোর্ট করার জন্য। আমি ড্রিংকসের (পানি পানের) সময় একটা কথা বলছিলাম পুরো টিমকে। বাংলাদেশ টিমের সবাই হয়তো বিশ্বাস করে নাই আমরা আজকে জিততে পারবো। যখন দর্শকরা আজকে মাঠে আসছেন তার মানে আপনাদের মনে এই বিশ্বাসটা ছিল আজ আমরা জিততে পারবো। এই বিশ্বাসটা আজ আমাদের অনেক কাজে আসছে। এ কারণে ধন্যবাদ।’

পরে আগের রাতে স্ত্রী শিশিরের সাথে ম্যাচ নিয়ে যে আলাপ হয়েছিল সেই কথা জানালেন। প্রত্যেক পুরুষের সাফল্যের পেছনে নাকি নারীর অবদান থাকে। সাকিবের কথাতে তা পরিষ্কার। শিশিরের কথা দর্শকদের সাকিব বললেন এভাবে, ‘একটা ছোট্ট ঘটনা বলি আজকে। কালকে রাত্রে আমি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমি বললাম, মনে হয় না জিততে পারবো। টাফ হয়ে গেল। আমার স্ত্রী আমাকে বলছে, তুমিই একমাত্র আছ যে জেতাতে পারে। সে এটা বিশ্বাস করে। ধন্যবাদ আমাকে এবং দলকে সাপোর্ট করার জন্য। ধন্যবাদ সবাইকে।’