বিএনপির সমাবেশ: বাসের স্বল্পতার পাশাপাশি যানজটের ভোগান্তি

রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের দিন রাজধানীমুখী বাস ও নগর পরিবহন কমে যাওয়ার পাশাপাশি তীব্র যানজটের ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশেপাশের সড়কগুলোকে গাড়ি চলছে একেবারেই স্লথ গতিতে। কোথায় কোথাও যানবাহনের সারি আটকে থাকছে দীর্ঘ সময়।

বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে সড়কে মিছিল না করার শর্ত দেয়া হলেও নেতা-কর্মীরা তা মানছেন না। তারা মিছিল নিয়েই সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। তবে পুলিশ এ জন্য কাউকে বাঁধাও দিচ্ছে না।

নগরীকে কর্মদিবসে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বরাবর তীব্র জনভোগান্তি হয়। এ জন্য সিটি করপোরেশন কর্মদিবসে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন না করার আহ্বান জানিয়েছে একাধিকবার। সরকারি দল আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে ছুটির দিন ছাড়া সভা-সমাবেশ না করার ঘোষণা দিয়েছে।

বিএনপি এই সমাবেশ করতে চেয়েছিল গত বুধবার। কিন্তু সেদিন অনুমতি না পাওয়ায় তা পিছিয়ে শনিবারে নেয়া হয়েছিল। পরে তা আরও একদিন পেছানো হয়। আর ২৩টি শর্তে পুলিশ বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে।

বেলা দুইটায় বিএনপির সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আরও আগে থেকেই সমাবেশ স্থলের দিকে আসতে থাকে। এতে করে কখনও সড়কের দুই পাশে, কখনও এক পাশে বন্ধ থাকছে গাড়ি চলাচল। এর প্রভাব গিয়ে পড়ছে গোটা রাজধানীতেই। কারণ, নগরীর কেন্দ্রস্থল মতিঝিল, গুলিস্তানের দিকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম।

পল্টন, প্রেসক্লাব থেকে মৎসভবন মোড় দিয়ে যে গাড়িগুলা শাহবাগ হয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকার দিকে যায়, বেলা ১১টার দিকে সেগুলোকে মৎস্য ভবনের দিকে সড়কে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

খাজা বাবা পরিবহনে চালকের সহকারী গোলাম কিবরিয়া জানান, শাহবাগ থেকে গণপূর্ত ভবনে আসতে দেড় ঘন্টা লেগেছে। আর এক জায়গাতেই এক ঘণ্টা থেকে বসে থাকতে হয়েছে তাদের।

একই পরিস্থিতিতে পড়ছে সায়েন্স ল্যাবরেটরি বা ফার্মগেট থেকে শাহবাগ হয়ে চলাচলকারী গাড়িগুলো। ফার্মগেট থেকে যেসব গাড়ি মৎস্য ভবন হয়ে চলে সেগুলোর একটি অংশ শাহবাগ না এসে রূপসী বাংলা হোটেল দিয়ে কাকরাইল হয়ে চলছে। আবার নিউ এলিফ্যান্ট রোডের বদলে চানখারপুল বা পলাশী হয়ে চলছে গাড়িগুলোর একটি অংশ। কিন্তু ওই সড়কের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গাড়ি যানজট তৈরি করছে। আর এই যানজট গিয়ে প্রভাব ফেলছে মিরপুর রোডেও।

মৎস ভবনের মোড়ে দায়িত্বরত শাহবাগ ট্রফিক জোনের ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক বলেন, ‘বিএনপির মিছিলের কারনে গাড়িগুলো যেতে পারছে না। এ জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রফিক দক্ষিণ) এডিসি মেহেদী হছান বলেন, ‘বিএনপিকে যে শর্ত দেয়া হয়েছিল তারা সে শর্ত মানছে না। তাদের ভিতরে থাকার কথা আর তারা রস্তায় মিছিল করছে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেছেন, বিএনপি তাদের কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে জনভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রাখে না বলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

কাদের বলেন, ‘এ ধরনের সমাবেশে জনভোগান্তি হবেই এটাকে সহনীয় মাত্রায় রাখা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। কিন্তু আজকে তো সহনীয় মাত্রায় নেই। সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করে এখন রাস্তা অচল হয়ে গেছে।’