ভাই অপরাধ করায় বোনকে সালিসিতে ধর্ষণের নির্দেশ

ভাইয়ের ধর্ষণ করার অপরাধের শাস্তি হিসেবে বোনকে ধর্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গ্রামের সালিসিতে। এই ঘটনায় জড়িত কমপক্ষে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পাকিস্তানের মুলতানে এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা আল্লাহ বক্স এএফপিকে বলেন, গ্রাম্য সালিসি জিরগায় ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিশোরীর ভাই ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছিল। ভাইয়ের অপরাধে বোনকে এই শাস্তি দেওয়া হয় ওই সালিস–বৈঠকে।

এই মাসের শুরুতে এক ব্যক্তি সালিসিতে অভিযোগ করেন, তাঁর চাচাতো ভাই ১২ বছরের বোনকে ধর্ষণ করেছে। এরপর সালিসি জিরগা অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বোনকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেয়।

পাকিস্তানের ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়, ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে সালিসিতে সবার সামনে এনে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের সময় কিশোরীর মা-বাবাও ঘটনাস্থলে ছিলেন।

স্থানীয় থানায় পরে ধর্ষণের শিকার ওই দুই মেয়ের মা অভিযোগ দায়ের করেন।

শারীরিক পরীক্ষায় দুই মেয়েই ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা আহসান ইউনাস বিবিসি উর্দুকে জানান, প্রথম যে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়, তার বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। প্রতিশোধ নিতে পরে যে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়, তার বয়স ১৬ অথবা ১৭ বছর। তিনি জানান, ২৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ নিয়েছে। সালিসি–বৈঠকে যে সবার সামনে ১৬ বছরের মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে, সে এখনো ধরা পড়েনি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ধর্ষণ করার নির্দেশ দানকারী জিরগায় স্থানীয় নেতারা ছিলেন। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জিরগায় আসলে দুই পরিবারের সদস্যরা মিলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পাকিস্তানের গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে জিরগা বা গ্রাম্য সালিসি হয়। তবে এটি অবৈধ। ধারাবাহিকভাবে বিতর্কিত বেশ কয়েকটি নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জিরগার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে অনার কিলিং ও প্রতিশোধমূলক ধর্ষণ।

২০০২ সালে জিরগা মুখতার মাই নামের ২৮ বছরের এক নারীকে গণধর্ষণের নির্দেশ দেয়। তাঁর ১২ বছরের ভাইয়ের সঙ্গে বয়স্ক এক নারীর অবৈধ সম্পর্ক থাকার কারণে এমন শাস্তি দেওয়া হয় মুখতারকে।

মুখতার এখন সোচ্চার নারী অধিকারকর্মী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত।