ভুয়া সনদ চক্রের নেটওয়ার্ক সারা দেশে!

মাত্র এক ঘণ্টায় মিলবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। নিকাহনামা আর বিয়ের সনদ পাওয়া যাবে কয়েক ঘণ্টায়। প্রতিটির জন্য গুনতে হবে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মাত্র। তবে কোনোটিই আসল নয়।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের নাম-পদবিসহ নকল সিল দিয়ে এসব গুরুত্বপূর্ণ সনদ তৈরি করছে একটি চক্র। চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, তাদের মূল টার্গেট বিদেশগামীরা।

বিদেশগামী যাত্রীদের দরকার হয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। এটি পেতে কমপক্ষে তিনদিন সময় লাগে। খরচ পাঁচশো টাকা। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সনদটিই পাওয়া যায় মাত্র ১ ঘণ্টায়। খরচ ২ হাজার টাকা। তবে এটি নকল।

সারা দেশে ভুয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি ও বিতরণ নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রের মূল হোতা রবিউলকে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। শুধু পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নয়, তার কারখানায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে জাল নিকাহনামা, বিবাহ সনদ, জাতীয় কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সার্টিফিকেট এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিলসহ নানা সরঞ্জাম।

একটি আসল পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে বারকোড, রেফারেন্স নাম্বার, পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর, থানার সিল, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকবে। উল্টো পৃষ্ঠায় থাকবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরসহ গোল সিল। এই প্রতারক চক্রটির তৈরি করা সদনদেও সব বিষয় দৃশ্যমান। তবে সবই নকল। বারকোড তৈরি করা হতো বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে। রেফারেন্স নাম্বার বসানো হয় ইচ্ছেমতো।

পুলিশ বলছে, নকল ক্লিয়ারেন্স সনদের পাশাপাশি নকল নিকাহনামা এবং বিবাহ সনদও তৈরি করে আসছিল তারা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, যারা এই রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে অথবা যাদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামরা চলমান আছে বা বিচারাধীন আছে তারাই মূলত ওই প্রতারক চক্রের কাছে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, হয়তো সাময়িকভাবে এটা কাজে লাগাতে পারবে। কিন্তু এটার আসল পরিণতি হচ্ছে- দীর্ঘ মেয়াদে এটা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। যারাই এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং যারা এসব ভুয়া সনদ নিচ্ছেন তাদের সবাইকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

রিক্রটিং এবং ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে চক্রটির যোগসাজশের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সৌজন্যে : সময় সংবাদ