মেস ভাড়া বৃদ্ধিতে বিপাকে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

মহামারী করোনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় স্কুল-কলেজের পাশাপাশি খুলতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নেয়া হচ্ছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। এদিকে হঠাৎ করেই গোপালগঞ্জের মেসগুলোতে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা ও নবীনবাগের মেসগুলোতে ভাড়া কমানো হলেও এখন অধিকাংশ মেসেই নেয়া হচ্ছে সম্পূর্ণ ভাড়া। কিছু মেসে ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

অন্যদিকে হল বন্ধ রেখে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে নেয়া হচ্ছে চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। হল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের উঠতে হচ্ছে বিভিন্ন মেসে। এ সময় ভাড়া নেয়া হচ্ছে বেশি। অনেক শিক্ষার্থীকেই শুধুমাত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ের জন্য নিতে হচ্ছে মেস ভাড়া। মেস ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সাকিব বলেন, “চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা চলছে। এর পরেই অন্যান্য বর্ষের পরীক্ষা নেয়া হতে পারে শুনে প্রস্তুতির জন্য গোপালগঞ্জে আসি। এক মাস আগেও মেস ভাড়া অর্ধেক নিয়েছিলো। এখন সোবহান সড়কের একটা মেসে সিট ভাড়া নিয়েছি সম্পূর্ণ ভাড়া দিয়েই।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুল ইসলাম মানিক বলেন, “সামনের মাস থেকে আমাদের বিভাগের বড় ভাইদের পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এক বড় ভাই একটা সিট বুক দিতে বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে। কিন্তু যতগুলো মেসে গিয়েছি, এক/দুই মাসের জন্য মেস ভাড়া শুনেই করোনাকালীন সময়ের জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া চাচ্ছেন। হল খুলে পরীক্ষা নিলে হয়তো এ সমস্যা হতো না।”
হল খোলার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও শেখ রেহানা হলের প্রভোস্ট মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, “হল খুলে দেওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হল খোলার নির্দেশনা আসলেই আমরা হল খুলে দিতে পারবো। ”

হল প্রভোস্ট কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট মোঃ ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, ” আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে এ মাসেই প্রভোস্ট কাউন্সিলের একটি মিটিং হয়।সেখানে হল খুলে দেওয়ার বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতির যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়, যেমন- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত বিষয়গুলো, সেসব বিষয়ে আমাদের ইতোমধ্যে মোটামুটি প্রস্তুতি সম্পন্ন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আসলেই আমরা হল খুলে দিতে পারবো।”

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব জানিয়েছেন কয়েক দিনের মধ্যেই একাডেমিক কাউন্সিলে হল খোলার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এক্ষেত্রে সবার জন্য হল খুলে দিতে হলে করোনার টিকা নিতে হবে বলেও জানান তিনি।

গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জনের সাথে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য কথা হয়েছে জানিয়ে উপাচার্য আরো বলেন, “সিভিল সার্জন এর সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে আমাদের ছেলেদের অগ্রাধিকার এর ভিত্তিতে টিকা দিয়ে দিবে।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অতিদ্রুত হল খুলে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হতে দেখা গিয়েছে।