পুরকায়স্থ বাজার হতে প্রধান কার্যালয় নিয়ে উধাও

মৌলভীবাজারের বড়লেখা দাসের বাজারে নবীন এগ্রো কোম্পানীর প্রতারণার ফাঁদ

ভূমি জরিপের সার্ভেয়ার থেকে এখন কোটি টাকার মালিক মো.আব্দুল কাইয়ুম। এক সময় তিনি মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরতেন সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে দলিল ও সরেজমিন ভূমি জরিপের জন্য। গত দুই বছরে হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে উঠেছেন তিনি। করে নিয়েছেন ব্যাংক ব্যালেন্স, এর রহস্য খুঁজতে বের হয় একের পর তথলের বিড়াল।

জানাযায়, সিলেটে গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের পুরকায়স্থ বাজারে নবীন এগ্রো এন্ড বেভারেজ কোম্পানী নিয়ে নানা রহস্যেরে ধুম্রজাল দিলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এলাকা ও প্রশাসনের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ঝড় উঠে। তাকে নিয়ে সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময়ে সিলেটে সংবাদ প্রকাশের দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পুরকায়স্থ বাজারের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে অফিসের সকল আসবাবপত্র নিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান নেন প্রতারণা প্রকল্পের পরিচালক। কিন্তু এ কোম্পানীর প্রতারণার অব্যাহত কার্যক্রম এখনও পরিচালনা করে যাচ্ছেন মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজারের হাজী তালেব আলী ম্যানশনে ও তার নিজ বাড়িতে।

উল্লেখ্য যে, গোলাপগঞ্জের পুরকায়স্থ বাজারে প্রধান কার্যালয় ব্যবহার করে সোস্যাল মিডিয়া ও এলাকায় বেশ আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নবীন এগ্রো এন্ড বেভারেজ কোম্পানীর চেয়ারম্যান নাম ধারী মো.আব্দুল কাইয়ুম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ কোম্পানী গোঠা লক্ষণাবন্দ, ঢাকাদক্ষিণ ইউপি, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলা দাসের বাজারে এলাকায় অফিস ও শো-রুম উদ্বোধন করে কোম্পানীর নানা গুনাগুন নিজের ফেসবুক পেইজে তুলে ধরছেন। আর প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধুমাত্র উঠতি তরুণীদের নিয়ে অফিসে মিটিং করতে দেখা যায়। কখনও এসব তরুণীরা গ্রামগঞ্জ থেকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের গরীব ও অশিক্ষিত নারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদী একটি মাইক্রো ক্রেডিট একাউন্ট খুলে ছোট, বড়, মাঝারী ইভেস্টার করে নিচ্ছেন। তবে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে তাকে নিয়ে নানা জল্পনা ও কল্পনার শেষ নেই।

এদিকে দাসের বাজারে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন মেয়েদের মিলন মেলা। ওই বাজারে নেই কোম্পানীর কোন শো-রুম শুধু মাত্র রয়েছে একটি অফিস। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দাসের বাজারে তার অফিসে সুন্দরী মেয়ে ও বিধবা মহিলাদের আসতে দেখেন। অফিসের ভেতরে কি ধরণের কার্যক্রম চলছে সাধারণ মানুষের চোখে অস্পষ্ট। অফিসে রয়েছিলো বড় একটি চেয়ার ও টেবিল তার পাশে রয়েছে আরও দুটি চেয়ার,বড় চেয়ারে বসেন চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম। তার সামনে রয়েছে আরও কয়েকটি চেয়ার ও বেশ কিছু সুন্দরী মেয়ে নিয়ে চলছে মিটিং গল্প আর আড্ডা। প্রতিদিন চলে মিটিং, কিন্তু দাপ্তরিক নেই কোন কার্যক্রম।

ঢুকতে দেওয়া হয় না এলাকার কোন তরুণ কিংবা কোন ব্যবসায়ীদের। শুধুই চলে অফিস উদ্বোধন, অতিথি হয়ে আসেন বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদ ও চেয়ারম্যান, মেম্বারগণ। আর যাদের অতিথি করে আনা হয়, তারা বেশির ভাগ প্রভাবশালী নেতা ও বিত্তশালীরা। এদের অতিথি করে তার বিভিন্ন কার্যক্রম দেখিয়ে নিজের ফেসবুক স্যোসাল মিডিয়ায় ঢাক ঢোল বাজিয়ে প্রচার করা হতো। কিন্তু এ কোম্পানীর অন্তরে কি কার্যক্রম এলাকার মানুষের কাছে রহস্য ঘেরার শেষ ছিলো না। শুধু লক্ষণাবন্দ পুরকায়স্থ বাজার নয়, ঢাকাদক্ষিণ ও বড়লেখার দাসের বাজারে অফিস উদ্ভোধনের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে জোরড়ালো ভাবে চলছে কার্যক্রম। কোম্পানীতে বিভিন্ন ফুড আইটেমের নাম উল্লেখ করে মার্কেটিং করছেন দাসের বাজারে। ওই বাজারে কোন প্রডাক্ট নেই, এখানে চলছে অর্থঋন আদান প্রদান। অত্র এলাকায় গরীব অসহায় মানুষদের পুঁজি করে সরলতার সুযোগে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

আরও জানা যায় মো. আব্দুল কাইয়ুম একজন জুলুমবাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। সম্প্রতি কিছু দিন পূর্বে পুরকায়স্থ বাজার এলাকার নিরিহ ব্যক্তি আব্দুল জলিল মিয়ার ক্রয়কৃত ৪ ডিসিমেল জায়গা নবীন টাওয়ারের জায়গা বলে জোরপূর্বক দখল করে নেন। এর বিচারের স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকা গণ্যমান্য বিচার করে ব্যর্থ হয়েছেন।