রংপুরে ৩৩দিন মাদ্রাসায় আটকে রেখে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ

রংপুরের মিঠাপুকুরে একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও একই সঙ্গে একটি মক্তবের দায়িত্বে থাকা হুজুর কর্তৃক ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে মাদ্রাসার ভিতরে আটকে রেখে ৩৩ দিন অনাবরত ধর্ষন করার অভিযোগ উঠেছে।জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মিঠাপুকুর উপজেলার ৩নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ও পরিবারের বরাত দিয়ে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ০৩ নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নের ইসলামপুর বিন্নাপাড়া গ্রামের মোঃ সামছুল ইসলামের পুত্র হাফেজ মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩০) নিজ এলাকায় ইসলামপুর বেলবাড়ি দারুস ছালাম একাডেমি নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসায় নিজেই পরিচালক ও শিক্ষক হিসেবে আবাসিক ছাত্রদের পড়াশোনা করার পাশাপাশি ইসলামপুর ভাংগার পাড়া মসজিদে ইমাম এবং মক্তব পড়ার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

এসময় তার মক্তবে পড়তেন ইসলামপুর ভাংগার পাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের নাবালিকা কন‍্যা, চূহড় দ্বী-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ওই ছাত্রী (১৪)। মক্তব পড়ার সময় অভিযুক্ত হুজুর আনোয়ার হোসেন ফুসলিয়ে ওই ছাত্রীকে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় গত-২৮ সেপ্টেম্বর রাতে কৌশলে বিয়ের প্রলোভণে নিয়ে গিয়ে একটানা ৩৩ দিন আটক রেখে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ওই ছাত্রীর খবর না পেয়ে বাবা সাইফুল ইসলাম মিঠাপুকুর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। পরে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে স্থানীয় কিছু ছেলে ওই হুজুরের মাদ্রাসায় গিয়ে নিখোঁজ ছাত্রী কোথায় আছে জানতে চেয়ে হুমকি দিলে অভিযুক্ত শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তার মাদ্রাসা থেকে ছাত্রীকে গতকাল বুধবার – ১ নভেম্বর রাতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

এসময় ওই ছাত্রীকে তার পরিবারের লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করিলে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

ধর্ষনের শিকার ওই ছাত্রী জানান, আনোয়ার হুজুর আমাকে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার অফিস কক্ষে রাখতেন। বিয়ের প্রলোভনে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন। তার অফিসে কেউ গেলে তাকে আলমারির ভিতরে লুকিয়ে রেখে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতেন।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান জানান, অভিযুক্তদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবার থানায় এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।