ঝালকাঠিতে প্রশাসনের উদাসীনতায়

রাজাপুরে গরুর খামারের ও বাথরুমের মলমূত্র মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে পরিবেশ চরম বিপর্যয়

ঝালকাঠির রাজাপুরের শুক্তাগড় ইউনিয়নের উত্তর কাঠিপাড়া গ্রামের খানবাড়িতে খামারে গরুর ও বাথরুমের মলমূত্র মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে পড়ে এলাকার স্বাস্থ্য ও পরিবেশ চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থায়ীভাবে মলমূত্র জমে থাকার কারনে এবং আশপাশের বসতবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ায় ডেঙ্গু মশার বংশবিস্তারসহ নানা রোগ ছড়াচ্ছে। এছাড়া আশপাশের বসতিদের জ্বর—কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছেন শিশুসহ অন্তত ১২ জন।

২ বছর ধরে এ পরিস্থিতি শিকার হয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে মৃত লিকায়েত আলী খানের ছেলে খামার মালিক সাইফুল ইসলাম খান ও সোহাগ খানের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী এমদাদ হোসেন খান ইউএনও, সার্কেল, রাজাপুর থানা, পশু হাসপাতাল, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে লিখিত অভিযোগ ও ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ ও খামারীদের হুমকিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী এমদাদ হোসেন খানের বসত ঘর সংলগ্নে গরুর গোবর এবং বাথরুমের থেকে পাইপ ছেড়ে দিয়ে ঘরের আশপাশে পাশেই ময়লা ফেলায় ওই এলাকার অর্ধশত পরিবারের চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এমদাদ হোসেন খানের পুরো বাড়িতে মলমূত্র ছড়িয়ে তলিয়ে রয়েছে। বৃষ্টিতে ওই মলমূত্র নালা ও খালের পানিতে ছড়িয়ে গিয়ে দেখা দিয়েছে নানা পানি বাহিত রোগ। জ্বর—কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছেন এমদাদ হোসেন খান (৫৫), স্ত্রী সাজেদা (৪২) বড় মেয়ে মাশুরা বেগম (২৮), রাছুমা আক্তার (২১), তাকিয়া আক্তার (২০) রাছুমার মেয়ে তাবাচ্ছুম (৩), জান্নাত (৮), মাশুরা বেগমের মেয়ে মিম (১৩), ছেলে রায়হানের স্ত্রী লাভনী বেগম (১৯), মেজ মেয়ে মানছুরার ছেলে আব্দুল্লাহ (১২), মেয়ে তাইয়েবা (৭), জুবায়ের (৪)।

তারা একাধিক বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং বর্তমানেও জ্বর—কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রয়েছেন। প্রতিপক্ষকে মলমূত্র না ফেলতে অনুরোধ করে কোন ফল না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দেওয়ায় অভিযুক্তরা হত্যাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। উল্টো থানাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ করেন এমদাদ হোসেন খানের স্ত্রী সাজেদা বেগম ও বড় মেয়ে মাশুরা বেগম।

অভিযুক্ত খামার মালিকদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে। এ অভিযোগের জানতে চাইলে অভিযুক্ত খামার মালিক সাইফুল ইসলাম খান জানান, খামারটি অনত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় বর্ষার কারনে নির্মান সামগ্রী মালপত্র নিতে না পারায় বিলম্ব হচ্ছে এবং বৃষ্টিতে মলমূত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি আরও দাবি করেন, স্থানীয়রা নালা কেটে মলমূত্র খাল—নালায় নামিয়ে দিতে না দেয়ায় মলমূত্র জমে রয়েছে এবং বৃষ্টিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর থানার এএসআই মোঃ রুস্তম হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চরম স্বাস্থ্য ঝুকির বিষয়টি দেখেছি। উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। এ ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্মকতার্র নির্দেশনা অনুযায়ী পরবতীর্ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।