ঝালকাঠি শিক্ষককে অপহরণ করে ১লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া ভুয়া র‍্যাব আটক

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার কৈখালী বাজার থেকে এক শিক্ষককে র‍্যাবের পরিচয়ে অপহরণ করে ১লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া মামলায় সেই দুই ভুয়া র‍্যাবকে কাঁঠালিয়া থানা পুলিশের সহায়তা র‍্যাব-৮ ও র‍্যাব-৬ আটক করেছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে তাদেরকে ঝালকাঠি আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে কাঁঠালিয়া থানার এসআই ইমরানের সহায়তায় র‌্যাব-৮ ও র‌্যাব-৬ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে খুলনা থেকে তাদেরকে আটক করে কাঁঠালিয়া থানা নিয়ে আসে।

আটককৃত আসামিরা হলেন, খুলার শিপইয়ার্ড এলাকার আনিসুর রহমানের ছেলে মো. আল-আমীন গাজী (৩২), এবং একই এলাকার আঃ কুদ্দুস ভুঁইয়ার ছেলে মো. বেল্লাল হোসেন (৪২)। বিষয়টি বুধবার সকালে নিশ্চিত করেছেন কাঁঠালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন সরকার।

মামালা সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালিয়া উপজেলার পশ্চিম তারাবুনিয়া এলাকার মো. সেলিম তালুকদারের ছেলে হৃদয় তালুকদার (২৭) রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের জে.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত।

গত মাসের ১৩ তারিখে বিদ্যালয় ছুটির পরে মোটরসাইকেলে বাড়িতে আসার পথে বিকালে কাঁঠালিয়া উপজেলার ১নং চেচরিরামপুর ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডের উত্তর চেচরি এলাকার কৈখালী বাজারে পৌঁছাইলে ৮/১০ জন লোক র‍্যাবের পরিচয়ে তাকে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

এরপর অপহরণকারীরা হৃদয় তালুকদারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার থেকে তার স্ত্রী শারমিন সুলতানার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ফোন করে জানায় তারা র‍্যাবের লোক। হৃদয় তালুকদারকে তারা ইয়াবা সহ গ্রেফতার করেছে। তাকে ফেরত পাইতে হইলে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা দিতে হইবে। তখন শারমিন নিরুপায় হয়ে ভান্ডারিয়া বাস।

স্ট্যান্ডের একটি বিকাশের দোকান থেকে অপহরণকারীদের দেয়া একটি বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা পাঠিয়ে দেয়। এরপর আবার অপহরণকারীরা শারমিনকে ফোন করে ৫০,০০০/- নিয়ে পিরোজপুর সদরের সিও অফিস মোড়ে আসতে বলে তার স্বামীকে ফেরত দিয়ে যাবে এবং পুলিশকে এবিষয়ে জানালে তার স্বামীর পরিণতি ভালো হবেনা বলে জানায়।

শারমিন সুলতানা পুলিশের সহায়তায় সিও অফিস মোড়ে গেলে পুলিশ ও র‌্যাবের তৎপরতা টের পেয়ে অপহরণকারীরা সেখানে আর আসে নায়। এরপর ভান্ডারিয়ার লক্ষিপুর ব্রিজ এলাকায় হৃদয়কে রেখে যায়। খবর পেয়ে কাঁঠালিয়া থানা পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কাঁঠালিয়া থানায় হৃদয় তালুকদারের পিতা মো. সেলিম তালুকদার বাদী হয়ে গত মাসের ১৬ তারিখে ৬জনের নামসহ অজ্ঞাত ৪/৫জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

এরপর অপহরণকারীদের মধ্যে একজন সোহেল তিনি মামলার সাক্ষী মানিকের মোবাইলে ফোন দিয়ে ভান্ডারিয়া সরকারী কলেজের সামনে আসতে বলেন সেখানে গেলে সোহেল ও তার সাথে থাকা ব্যাক্তিরা নিজেদেরকে র‍্যাবের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে মানিক খানকে হাতকড়া পড়িয়ে গাড়িতে তুলে তার চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেধে খুলনা নিয়ে যায়।

উদ্ধার হওয়ার পরে মানিক খান পুলিশের কাছে স্বীকারউক্তমূলক জবানবন্দি দিলে কাঁঠালিয়া থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ সোহেল হাওলাদারকে (২৮) আটক করে।

আটককৃত মোঃ সোহেল হাওলাদারকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল বলে স্বীকার করে। এবং তিনি আরও জানায় অপহরণের সময় তার সাথে মোঃ হাফিজুল (২৭), মোঃ খলিল হাওলাদার, মো. চঞ্চল আকন (৩৩), মোঃ আলাউদ্দিন (২৮), মো. আল আমিন (৩২), সহ আরো অজ্ঞাত ৪/৫ জন অংশ নিয়েছিল।

কাঁঠালিয়া থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীন সরকার বলেন, শিক্ষককে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া মামলায় পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করেছে। তাদেরকে বুধবার সকালে ঝালকাঠি আদালতে পাঠানো হয়েছে।