‘রায়ের আলোকে দণ্ডপ্রাপ্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইসিকে’

কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড হলে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না- হাইকোর্টের এই আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বুধবার (২৮ নভেম্বর) সকালে ড্যাব নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

দুদকের আইনজীবী বলছেন, দণ্ডিতদের ক্ষেত্রে এ রায়ের আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আসামিপক্ষের আইনজীবী বলছেন, তারা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন, প্রার্থিতার প্রয়োজনে আবারো যাবেন আদালতে।

দুর্নীতির দায়ে নিম্ন আদালতের রায়ে সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ পাঁচজন। মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) হাইকোর্ট তাদের আপিল খারিজ করে দিয়ে বলেন, কমপক্ষে দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তি সাজা স্থগিত কিংবা বাতিল না হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যান বিএনপি নেতা ডা. জাহিদ হোসেন।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ এ ব্যাপারে কোনো আদেশ না দিয়ে আপিল নিষ্পত্তি করেন। ফলে হাইকোর্টের বহাল থাকবে বলে জানান আইনজীবীরা।

এই আদেশের ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। দুদক আইনজীবী বলছেন, নির্বাচন কমিশনকে এখন দণ্ডিত ব্যক্তিদের প্রার্থিতার ব্যাপারে এই রায়ের আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য থাকবে।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, ‘যারা ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত রয়েছেন তারা নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এই রায় দেয়া হয়েছে সংবিধানের ৬৬/২ এর (খ) ধারার আলোকে। যারা দণ্ডপ্রাপ্ত তাদের ওপর এই রায় বাধ্য। এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর এই রায় বাধ্য। নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এই রায় মাথায় রাখতে হবে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ‘ নৈতিক স্খলন জনিত কারণে ২ বছরও কারো সাজা হয় তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। তিনি যদি খালাসও পেয়ে যান তবুও তাকে মুক্তিলাভের ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্যে।’

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, তাদের মক্কেলরা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। আসামিপক্ষের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনে যেতে পারবেন কি পারবেন না এটা রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত।’

এই মামলার রায়ে নির্বাচনে অযোগ্য ব্যক্তিরা সবাই দুর্নীতির বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।