লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দু’পক্ষের সংঘর্ষের ইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামি অর্ধ শতাধিক

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়িতে হত্যা মামলায় আসামী করাকে কেন্দ্র করে দু’ পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্ডলের ছোটভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনও তার ৬ ভাইসহ ১২ জনকে আসামী করা হয়েছে । অজ্ঞাত করেছে আরো কয়েকজনকে।যার মামলা নং-১৬, তারিখ- ১১/১০/২০২৩ইং।

অপরদিকে সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের ছোটভাই সুবেদ আলী বাদী হয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ৪ ভাইসহ আরো আসামী করা হয় ১১ জনকে। একখানেও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। মামলা নং-১৭, তারিখ- ১২/১০/২০২৩ ইং।

প্রতক্ষদর্শী ও স্থানীয় থানা সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের আব্দুর জব্বার ও বক্সারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ২ অক্টোবর সংঘর্ষে আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বক্সার আলী। চিকিৎসারত অবস্থায় গত ৫ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত হয় বক্সার আলী।

এ ঘটনায় নিহত বক্সারের ছেলে জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মোন্নাফ হোসেনকে প্রধান আসামী করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ তদন্ত করে উক্ত মামলা এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করেন। ওই মামলায় বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের কয়েকজন ঘনিষ্ঠজনকে আসামী করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ভেলাগুড়ি।

শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ অক্টোবর গুলের চৌপথিতে এক মানববন্ধন করে মোন্নাফসহ ২ জন আসামীর নাম বাদ দেয়ার জোর দাবী জানানো হয়।উক্ত মানববন্ধনে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বর্তমান চেয়ারম্যানের লোকজনকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তোলা হয়। নিরাপরাধ লোকজনকে আসামী করার কথাও তুলে ধরা হয় ওই মানববন্ধনে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১১ অক্টোবর জাওরানী বাজারে বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ বাঁধে যায়।

এতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সেসময় ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এ প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, মহির উদ্দিন নির্বাচনে হেরে ভেলাগুড়িতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যে কারনে এখানে শান্তি শৃংখলা বিঘ্ন ঘটছে।বিনা উস্কানিতে মহির উদ্দিনের নেতৃত্বে আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়। এসময় মোটর সাইকেলও আমার অফিসে ভাংচুর চালানো হয়েছে।

সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সবদিক দিয়ে ব্যর্থ। তার দায়িত্ব নেয়ার দেড় বছরে ভেলাগুড়িতে খুন হয় ৯ জন। তিনি আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমার উপর দোষ চাপায়। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে গত ১১ অক্টোবর আমার উপর হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমি ও আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলোজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছি।

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহ আলম এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয়পক্ষের মামলা এজাহারভূক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকে চেস্টা চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।