শাস্তি কল্পনাও করতে পারবেন না : সরকারকে ড. কামাল

বর্তমান সরকারকে এমন শাস্তি পেতে হবে যেটা তারা কল্পনাও করতে পারবে না- বলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন সবাই চায়, জনগণ হাত তুলে রায় দিয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অমান্য বা উপেক্ষা করলে, যে শাস্তি আপনারা পাবেন তা কল্পনাও করতে পারবেন না।’

শনিবার চট্টগ্রামে নসিমন ভবনের সামনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় এসব কথা বলেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা। সুষ্ঠু নির্বাচনসহ সাত দফা দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে নবগঠিত এই জোট।

গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন ড. কামাল হোসেন। গত ২৪ অক্টোবর তাদের প্রথম সমাবেশ হয় সিলেটে। আজকের জনসভা তাদের দ্বিতীয় কর্মসূচি।

ড. কামাল তার বক্তব্য বারবার সরকারের বিচার, মামলা করার হুমকি দেন। বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যত অন্যায় করেছেন সব কিছুর জবাবদিহি করতে হবে। জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক। …এ সরকারের সকল অপকর্মের বিচার একদিন না একদিন বাংলার মাটিতে হবে।…আমি বেঁচে থাকলে জনগণকে কষ্ট দেয়ার অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করে শাস্তির ব্যবস্থা করব।’

‘বাংলাদেশ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এদেশের মালিক ১৬ কোটি জনগণ। আজকে জনগণ ৭ দফার পক্ষে হাত উঠিয়ে গণরায় দিয়েছে। সরকারকে বলব, সময় থাকতে ৭ দফা দাবি মেনে নিন। যারা ১৬ কোটি মানুষকে কষ্ট দেয়, আমি বেঁচে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করব।’

এই জনসভাটি লালদীঘি মাঠে করতে চেয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। আর এর সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, ‘জনসভা করার অনুমতি না দেয়ার পেছনে যারা জড়িত ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করা হবে। সরকার একটার পর একটা অসাংবিধানিক কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকায় গিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে মামলা করব। শপথ ভঙ্গকারীদের বিচার করে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে।’

‘মিছিল সমাবেশ জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। সরকার সে অধিকারে বাধা দিয়ে পদে পদে সংবিধান লঙ্ঘন করছে। লালদীঘিতে কেন সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না তা খুঁজে বের করব।’

‘সংবিধানে লেখা আছে দেশের মালিক জনগণ, সরকার সেবক। এখন সেবকরা মালিককে কষ্ট দিচ্ছে। লালদীঘিতে সমাবেশ হলে সবাই বসে কথা শুনত। রাস্তার উপর সমাবেশে এসে একটানা চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনা কষ্টকর। যারা এ কষ্ট দিল তাদের বিচার জনতার আদালতে হবে।’

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির বিষয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়ার ব্যাপার না, এটা তো হওয়ার কথা। আর কত চাওয়া হবে? চাইতে চাইতে তো মানুষ বিরক্ত হয়ে গেছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি অবশ্যই হোক। যদি তাঁকে মুক্তি দেয়া না হয় তবে জবাবদিহি আদায় করব, শাস্তি দেয়া হবে। বিচার হবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদত হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, জেএসডির সভাপতি আ সম আব্দুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু প্রমুখ বক্তব্য দেন।