শিল্প মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি পণ্য ও বাজারের সাপ্লাইচেন এবং ফুড সেফটি নিশ্চিত করবে মন্ত্রণালয়। সারসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা, যোগান, সরবরাহ ও মান কেন্দ্রীয়ভাবে দেখভাল করা হবে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি বাজারে থরে থরে পণ্য সাজানো দেখা যায়। তার মানে পণ্য উৎপাদনেও কোনো সমস্যা নেই; সমস্যা আছে সরবরাহে। সে জন্য আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে আইসিটি বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করলাম। এর মাধ্যমেই আমরা দুর্নীতিকেও বিদায় জানাবো।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আমরা মালোয়েশিয়া ও কোরিয়োর কাতারে থাকতাম। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃঢ় নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জনের কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অনুকরণীয় হচ্ছে। কোভিড সময়ে আমরা আমাদের ডিজিটাল রূপান্তরের সুবিধা পেয়েছি। এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশকে কখনো দাবায়ে রাখা যাবে না।

সোমবার (২৭ মার্চ) শিল্প মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আজ এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তর/সংস্থা কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমঝোতা স্মারকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষে সচিব মো: সামসুল আরেফিন স্বাক্ষর করেন।

বিশেষ অতিথি শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সাথে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আজকের এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে এবং জাতীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় স্মার্ট ফার্টিলাইজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নের ফলে সকল ধরণের সার পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিতরণ কার্যক্রম সহজতর হবে। পাশাপাশি চিনি, লবণ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার সকল ধরণের পণ্য সামগ্রীর উৎপাদন হতে বিপণনে স্মার্ট ব্যবস্থাপনায় আনয়নের লক্ষ্যে ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং, ইআরপি সিস্টেমের পাশাপাশি পণ্য সামগ্রীর বাজারজাতকরণে ই-কমার্সের প্রচলনের ব্যবস্থা ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে। ৭০ লাখের বেশি ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাকে ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে উভয় মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি আরও বলেন, ৫ বারের দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন দেশকে টেনে তুলতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে। ইজিপি এবং ই-নথি’র কারণে বাংলাদেশ বিশ্বে দুর্নীতির বদনাম থেকে মুক্ত হয়েছে। এখন আইসিটি খাতকেও বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের রয়েছে। এজন্য আমরা স্মার্ট ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে চাই। এক্ষেত্রে আইসিটি বিভাগ সহযোগী ভূমিকা পালন করবে। এর মাধ্যমে শিল্পমন্ত্রণালয় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে।

উল্লেখ্য, স্মার্ট ফার্টিলাইজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ইউনিক ইন্ডাস্ট্রি নম্বর, মেধা স্বত্ব সংরক্ষণ, ডিজিটাল পণ্য ও সেবার স্টান্ডার্ডাইজেশন ও এক্রিডিটেশন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগি মানব সম্পগ উন্নয়ন, ই-লাইব্রেরির আধুনিকায়ন, গবেষণা উদ্ভাবন ও উদোক্তা সৃজন এই ৭টি ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে যৌথভাবে কাজ করার লক্ষে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে দু’টি মন্ত্রণালয় কাজের ক্ষেত্র অত্যন্ত বিস্তৃত এবং ব্যাপক। কাজেই বিস্তৃত পরিসরে আমরা সহযোগিতা বিনিময়ের পাশাপাশি বেশ কিছু উদ্যোগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব, যা বাংলাদেশের সর্বস্তরের নাগরিকগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।