সোহরাওয়ার্দী রাজনীতিবিদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদও ছিলেন : ঢাবি উপাচার্য

গণতন্ত্রের মহানায়ক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী রাজনীতিবিদের পাশাপাশি একজন শিক্ষাবিদও ছিলেন মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, জনগণের প্রতি অসীম ভালোবাসা এবং গণতন্ত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাই ছিল তাঁর জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১২৯ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মাজার প্রাঙ্গনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের শোষণ শাসন থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন ৫৪ সালে পাকিস্তানের নির্বাচন। ৫৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে বাঙালিদের প্রকৃত একমাত্র নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। এই দুজনের একজন ছিলেন আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করা শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাঙালিদের জাতির পক্ষে দৈনিক ইত্তেফাকের মাধ্যমে মানুষের কাছে দাবি দাওয়া পৌছে দেওয়া ইত্তেফাকের সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। এই দুই মহান ব্যক্তির জন্য বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়। বাঙালি জাতির স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য শেখ মুজিব ও মানিক মিয়াকে প্রস্তুত করেছিলেন সোহরাওয়ার্দী।

সংগঠনের সভাপতি ইতিহাসবিদ সিরাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক এম এ জলিলের সঞ্চালানায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন (ভার্চুয়াল) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বিশ্ববাঙালি সম্মেলনের সভাপতি কবি মুহম্মদ আবদুল খালেক, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন গনি মিয়া বাবুল, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন পাঠান, বরিশাল বিভাগ সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল আলিম খান, যুগ্ম সম্পাদক আ.স.ম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ জাসদ নেতা সেলিম আখন্দ, স্মৃতি পরিষদের সহ সভাপতি ফাতেমা খাতুন প্রমুখ।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান থেকে আমাদেরকে মুক্তির জন্য যে সংগঠনটি কাজ করেছিল সেই সংগঠনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সেই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। এই আওয়ামী লীগই নেতৃত্বে দিয়ে ৯ মাসের যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। আমরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে ঋণী। তিনি বঙ্গবন্ধুর মত একজন নেতাকে বাঙালি জাতিকে উপহার দিয়েছে।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কেবল একজন রাজনৈতিক নেতাই নন, তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়কও ছিলেন। জনগণের প্রতি অসীম ভালোবাসা এবং গণতন্ত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাই ছিল তার জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। দেশ ভাগের আগে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি অখণ্ড স্বাধীন বাংলা নামে একটি ‘ডমিনিয়ন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।

সভাপতির ভাষণে ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ বলেন, জাতির মহান নেতাদের স্মরণীয় বরণীয় করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি নজরুল ইসলাম ও কবি জীবনানন্দ দাসের জন্য একটি গবেষণা কেন্দ্র দরকার। সেই গবেষণা কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর আবেদন করছি। সাথে সাথে উল্লেখিত নেতাদেরকে জাতীয়ভাবে স্মরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।