গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা ঘোষণা
ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলন, সরকার ও শাসন ব্যবস্থার বদলে ১৪ দফা ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এর মধ্যে রয়েছে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংশোধন করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখাসহ বেশকিছু দাবি। সোমবার রাজধানীর শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন, সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা’ শিরোনামে গণতন্ত্র মঞ্চ দাবিগুলো পেশ করে।
দাবিগুলো হলো বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা, সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা, অবাধ, নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা, নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে নির্বাচনে টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা, আরপিও সংশোধন করা, প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরিবর্তন করা, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করা।
এছাড়া সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, ন্যায়পাল ও সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংস্কার করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া সব বিলে স্বাধীন মতামত দেওয়ার সুযোগ করা।
প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ও দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।
এর পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কারাবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি, সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে সভা, সমাবেশ, মিছিলসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনও বাধা সৃষ্টি না করা, বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা বেআইনি হিসবে গণ্য করা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সহ মৌলিক নিবর্তনমূলক কালাকানুন বাতিল করার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশি ব্যবস্থার নামে শ্রমিক আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করা।
জরুরিভিত্তিতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, গরীব ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতসমূহে স্বেচ্ছাচারী মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করা ও রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দেওয়া দায়মুক্তি আইন বাতিল করা।
গত ১৫ বছরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং, শেয়ার মার্কেটসহ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করা।
গুমের শিকার সব নাগরিকদের উদ্ধার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ করা। কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল-চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু করা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন