পুলিশ-আ.লীগের সঙ্গে সংঘর্ষ গুলি, ১৪ জেলায় নিহত ৪১

রাজধানী ঢাকাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে ছাত্র-জনতা। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ফেনীতে ৭ জন, নরসিংদীতে ৬, মুন্সীগঞ্জে ৩, বগুড়ায় ৪, মাগুরায় ৪, ভোলায় ১, পাবনায় ৩, কুমিল্লায় ২, সিরাজগঞ্জে ১, ধামরাইয়ে ১, রংপুরে ৪, বরিশালে ১, সিলেটে ২, জয়পুরহাটে ১ ও ঢাকায় ১ জনসহ মোট ৪১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেনী

ফেনীতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৭ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল হোসেন যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আহত অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রায় ৬০ জনের মতো আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন জেনারেল হাসপাতালে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নরসিংদী

নরসিংদীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

রংপুর

রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বে থাকা আব্দুল জলিল দুজন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও দুজন নিহতের তথ্য জানিয়েছেন।

নগরীর পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা ও তার গাড়িচালক সংঘর্ষের সময় নিহত হন। তাদের লাশ সিটি করপোরেশন গেটের সামনে পড়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

পাবনা

পাবনায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন।

পাবনার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ বলে জানা গেছে। সেখানে এখনো গোলাগুলি চলছে বলে জানা গেছে।

বগুড়া

বগুড়ায় সকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে হাজারো জনতা। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে রাস্তায় আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত বগুড়া শহর ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা। এখন পর্যন্ত সেখানে চারজন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে।

মুন্সীগঞ্জ

মুন্সিগঞ্জে এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত তিন জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। সকাল পৌনে ১১টার দিকে শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ধামরাই

ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। তবে তিনি কখন এবং কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক আহমেদুল হক তিতাস বলেন, ‘দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে কয়েকজন ওই যুবককে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসে। যুবকের পিঠে গুলিবিদ্ধের চিহ্ন দেখা গেছে। মরদেহ এখানে ফেলে সেই যুবকেরা চলে গেছে।’

মাগুরা

মাগুরায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।

কুমিল্লা

কুমিল্লার দেবিদ্বারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। দুপুর ১টার দিকে উপজেলার নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জ শহরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন এ এফ এম ওবায়দুল ইসলাম জানান, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।

ভোলা

ভোলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।

এছাড়া বরিশালে ১ জন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে ২, জয়পুরহাটে ১ ও ঢাকায় ১ জন নিহত হয়েছেন।
সূত্র : যুগান্তর