রাজকীয় সংবর্ধনায় সিক্ত সাফজয়ী পাহাড়ের ৩ ফুটবলার

(সাফ) নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ জয়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন বীর কন্যাদের রাজকীয় সংবর্ধনা দেয়া হয় রাঙামাটিতে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ট্রাক ও মোটর শোভাযাত্রা বের করা হয়। এরপর শোভাযাত্রাটি রাঙ্গামাটি জেলা শহরের ভেদভেদী-আসামবস্তি-তবলছড়ি-দোয়েল চত্বর-বনরূপার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এ সময় সড়কের দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ হাত তুলে বীর কন্যাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান, রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার মোঃ শওকত উসমান রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার ড.এস এমন ফরহাদ হোসেন, রাঙ্গামাটি জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল মোঃ এরশাদ হোসেন চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেন। প্রায় কয়েক হাজার দর্শক সাফ বিজয়ীদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সংবর্ধনা দেয়া হয় সাফ বিজয়ী রূপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চকমা।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রতি খেলোয়াড়কে ১ লাখ টাকা করে, রাঙ্গামাটি রিজিয়ন হতে প্রতি খেলোয়াড়কে ১ লাখ টাকা করে, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ হতে প্রতি খেলোয়াড়কে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়া রাঙ্গামাটি পৌরসভার পক্ষ হতে প্রতি খেলোয়াড়কে ৫০ হাজার করে টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। জেলার বিভিন্ন সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও এই তিন খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়।

সাফজয়ী ঋতুপর্ণা বলেন, আমরাও অত্যন্ত গর্বিত, বিজয়ের এই উদযাপন আমরা একসাথে করতে পেরেছি এটা আমাদের জন্য একটা অর্জন। আপনাদের মত মহান ব্যক্তিদের কাছ থেকে সম্মানিত হওয়া এবং সংবর্ধনা পাওয়া আমাদের জন্য বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। এভাবেই ভালোবেসে সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন যেন এর থেকেও বড় বড় বিজয় আমরা আপনাদের উপহার দিতে পারি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ৩ কৃতি খেলোয়াড় এমন উচ্ছল নক্ষত্রে পরিণত হয়েছে যে নক্ষত্রের আলোয় আমরা আলোকিত হয়েছি। তোমাদের এই অর্জন অভাবনীয়। আমরা গর্বিত।

জেলা প্রশাসক বলেন, “আমরা রাঙ্গামাটি জেলায় বিকেএসপির একটি শাখা স্থাপনের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি এবং সরকার এটি অনুমোদন দিয়েছে এবং এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই রাঙ্গামাটিতে বিকেএসপি স্থাপন করা হবে। এই ৩ কৃতী খেলোয়াড়দের জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকেও ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে জানান জেলা প্রশাসক।

রিজিয়ন কমান্ডার মোঃ শওকত ওসমান বলেন, জেলার ৩ কৃতি সন্তান তাদের এই গৌরব গাঁথায় আমরা একসাথে মিলিত হতে পেরেছি এটা অত্যন্ত আনন্দের। তোমাদের এ সাফল্য দেশ এবং পার্বত্য জেলার জন্য অত্যন্ত গৌরবের। “শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে একটি অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব” এবং এই তিন ফুটবলার আজকে আমাদের সেই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার পাহাড়ি এক গ্রামে অবস্থিত ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়। যাকে বলা হয় নারী ফুটবলার তৈরির সূতিকাগার। জাতীয় মহিলা সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের তিন খেলোয়াড় উঠে এসেছেন রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ফুটবল খেলার হাতেখড়ি মনিকা, ঋতুপর্ণা, রুপনাদের।