কলারোয়ায় নৌকার ভোট করায় শিক্ষককে আহত করলেন পরাজিত মেম্বর!

সাতক্ষীরার কলারোয়ার সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক ও এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন এবং কাজ করায় সাইদুর রহমান নামে এক শিক্ষককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে আরেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। রফিকুল ওই ইউনিয়নের ৯নং (রামকৃষ্ণপুর-শ্রীরামপুর) ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য, যিনি সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

গত শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বাজার সংলগ্ন বাঁশতলা মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক সাইদুর রহমান বর্তমানে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ব্যাপারে রোববার সকালে কলারোয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানান সাইদুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন।

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নৌকা প্রতীকের পক্ষে ও একজন মেম্বার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করায় তার ওপর নানাভাবে হুমকি আসছিলো। সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডের (রামকৃষ্ণপুর-শ্রীরামপুর) পরাজিত মেম্বর রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৬/৭ জনের একটি বাহিনী গত শুক্রবার অতর্কিতভাবে আমার স্বামীর উপর হামলা চালায়। আমার স্বামীকে একা পেয়ে তারা মারাত্মকভাবে তাকে জখম করে। এসময় তিনি মাথায় প্রচন্ড আঘাত পান এবং শরীরের অনেক অংশ রক্তাক্ত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঐদিন সকাল ১১টার দিকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।’

সাইদুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন আরও বলেন, ‘আমার স্বামীকে ওরা কুপিয়ে জখম করেছে। আবার উল্টো ওরা আমার স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এখনো তারা নানাভাবে আমাদের হয়রানি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন আতংকের মধ্যে সময় কাটাচ্ছি। আমরা রবিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, এঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামকৃষ্ণপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ‘ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর রফিকুল সবার উপর যেন মারমুখী হয়ে উঠেছে।’ তিনি এলাকার আরো অনেককে এমন হুমকি ধমকি দিয়েছেন বলেও জানান তারা।

আহত শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম আমার ওপর শুধু এই নৃসংশ হামলা চালিয়ে ক্ষ্যান্ত হননি। তিনি আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমার ও আমার পরিবারকে নানাভাবে এখনো হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী বিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন আমার উপর আরও চড়াও হয়ে ওঠে। সেদিন সাইদুর মাষ্টারের উপর আমরা হামলা করিনি, বরাং তারাই আমার উপর নির্মমভাবে হামলা করেছিল। আমি কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। আজ (রোববার) ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় এসেছি।

এ বিষয়ে সোনাবাড়ীয়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। শিক্ষক সাইদুর রহমান আমার একনিষ্ঠ কর্মী। তার ওপর এ হামলার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকলে অফিসার (আর.এম.ও) ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাইদুর রহমানের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি এখন শংকামুক্ত।’

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, ‘শিক্ষক সাইদুর রহমানের পক্ষ থেকে আমরা আজ (রবিবার) একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টা দ্রুত তদন্ত করে আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’