আপন শুন্যতায় | জি এম ফারুক

আপন শুন্যতায়

জি.এম ফারুক


এখন রাত্রী নিঝুম, অনেক প্রহর।
বাবলা- বনের পাশে উকি দিয়ে
অনেক দুরে সরে গেছে ষোড়ষী- মেয়ের বয়সী চাঁদ !
অবষাদ মুছে গেছে ,
বাঁশ- বনের অন্ধকারে জেগে থাকা জাঁনাক- পোকার !
ঝিঁ- ঝিদের ডাকা- ডাকি থেমে গেছে
সেইযে কখন– তুমি এলেনা !
কুয়াঁশার ধূষোর চাঁদর পরে– বুড়ি হল হেমন্ত- রাত –তবু এলেনা তুমি !

আসবেতো বলেছিলে !
কার্তীকের কোন এক বিশুদ্ধ- জোছনায়
বলেছিলে আসবে তুমি — আসনি ।
হয়তো মনে নেই, হয়তো আসবেনা,
হয়তোবা তোমার চোখে জমে থাকা
আষাড়ের এলো- মেলো বৃষ্টির মতো
খন্ড-খন্ড স্মৃতীময় শত-স্বপ্নের ভিড়ে,
একেবরেই ভূলে গেছো – কোন একদিন
হঠাৎ দেখা স্বপ্নের মতো,
কোন এক অক্ষ্যাত কবির পাশে বসেছিলে
ক্ষনিক-কখন ।
তারপর – বিকেলের পাংশুটে সর্যটা-
পৃথিবীর আড়াল না হতেই- ভুলে গেলে তাকে।
ভূলে গেলে – বলেছিলে,
কবি ! তোমার খাতার পতায় ,
আরও একটি কবিতা হতে পারেনা ?
যেখানে আমাকেই পাবে তুমি !
লিখ ! যদি ভালোবাসতে পারো- একটি কবিতা লিখ।
যার সার-মর্ম হব আমি !
বলেছিলে, জোছনা-রাতে প্রকৃতীও আপন হয়।
একদিন দেখে নেবো, প্রকৃতি আর কবি
দূ-জনকে এক সাথে কেমন দেখায়!
হাজার জোছনা আজ হয়ে গেছে পার ,
তবু সেই রাত আর কভু ফেরেনি তোমার !
দেখা হয়নি একসাথে
আজও কোন জোছনা কিংবা অমানিশা !

এখন দারুন-দুঃসময় !
সময় চলছে কেবল টাকার চাকায় !
তাইতো, তোমার ভ্যানেটি আর গহনার চাপে-
শাষ-রূদ্ধ কবিতারা কোন মতে বেঁচে আছে,
জীর্ণ-শির্ণ মলিন-ছেড়া পান্ডুলিপী হয়ে।

কবিকে চেননা তুমি !
কবিতা পড়ার-মনও বুঝি মরে গেছে সেই কবে!
অনেক বদলে গেছো তুমি !
বদলে গেছে তোমার রোজ-নামচার টুকি-টাকি অনেক কিছু।
শহুরে-স্বামীর মোটা রোজগার আর
বিদেশী চ্যানেল দেখে দেখে বেমালুম ভূলে গেছো,
সুদুর গাঁয়ের শিরিষ-বনের পাশে যেগে থাকা
চাঁদের দিকে চেয়ে অনিমেষ প্রহর-গোনা
এক ব্যার্থ কবির কথা !
ভুলে গেছো — তার সাথে শ্বক্ষতা ছিল একদিন।
ভূলে গেছো আজ !
হায় ! কতোসহজেই ভূলে গেছো সব !
বেশ ! ভূলে গেছো — ভূলেই থাকো –
থাকো তুমি অন্য কোথাও –
আর কারও সুখ-স্মৃতী নিয়ে !
আমি আছি দুরে — অন্ধকারে ,
নিজেরে লুকায়ে নিজেরই শুন্যতায় !!