কিভাবে বছরে ৪.৪ কোটি আয় করেন এই যুবক!

সেটা ২০০৯ সাল। বিশ্ব অর্থনীতিতে এক উল্লেখযোগ্য ধসের বছর। এই বছরেই লন্ডনে কর্মরত দুই মরাঠি যুবক টের পান তাঁদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। মন্দার বাজারে চাকরি হারান তাঁরা। কিন্তু তার পর থেকে ভাগ্যের চাকা সম্পূর্ণ অন্যদিকে ঘুরে যায় তাঁদের। সুবোধ যোশী এবং সুজয় সোহানি তার পরে নেহাতই ভাগ্যের উপরে নিজেদের সমর্পণ করেন। দুই জনে টাকাকড়ি জোগাড় করে লন্ডনের হ্যারো অঞ্চলে একটি বড়া পাও-এর দোকান খোলেন। তার পরে বাকিটা রূপকথারই সামিল। সেই দোকান শ্রী কৃষ্ণ বড়া পাও থেকে আজ তাঁদের আয় বছরে ৪.৪ কোটি টাকা! আর সেই দোকানটি আজ এক রেস্তোরাঁয় পরিণত। সেই সঙ্গে সুবোধ ও সুজয় খুলেছেন বড়া পাও চেন-ও।

যে সময়ে চাকরি হারিয়ে ব্যবসার কথা ভাবছেন সুবোধ ও সুজয়, সেই সময়ে লন্ডনের মতো শহরে রেস্তোরাঁর জন্য জায়গা পাওয়া ছিল খুবই দুরুহ।

বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে সুবোধ এক পোলিশ আইসক্রিম কাফেকে রাজি করান তাঁদের জায়গা দেওয়ার জন্য। এ বাবদ তাঁরা মাসে ৩৫ হাজার টাকা ভাড়া নিতে শুরু করেন। এই ভাবেই শুরু হয় টিপিক্যাল মুম্বইয়া ডিশ বড়া পাও-এর ব্যবসা। শুরুতে এক প্লেট বড়া পাওয়ের দাম ছিল ১ পাউন্ড। কিন্তু প্রথম দিকে তাঁদের খদ্দের তেমন হতো না। এমন অবস্থায় তাঁরা মার্কেটিংয়ের নতুন কৌশলের কথা ভাবেন। তাঁরা তাঁদের বড়া পাও নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ান এবং পাবলিককে বিনাপয়সায় খাওয়াতে থাকেন।

তাঁদের ক্যাচলাইন ছিল ইন্ডিয়ান বার্গার: অন্য বার্গারের চাইতে সস্তা ও সুস্বাদু। ক্রমে লন্ডনের মানুষজন আগ্রহী হতে শুরু করেন এই আজব বার্গারের প্রতি। বিক্রি বাড়তে শুরু করে। এমন সময়ে একটু বড় জায়গা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই পর্যায়ে এক পাঞ্জাবি রেস্তোরাঁ তাঁদের একত্রে ব্যবসার প্রস্তাব দেয়। সুবোধ ও সুজয় রাজি হন। আজ শ্রী কৃষ্ণ বড়া পাও-এ ৩৫ জন কর্মচারী চাকরি করেন। তাঁদের মধ্যে ভারতীয় ছাড়াও রোমানিয়ান ও পোলিশরা রয়েছেন। তিনটি ব্রাঞ্চে আজ অপারেট করে বড়া পাও ব্যবসা। বার্ষিক আয় ৪.৪ কোটি ভারতীয় রুপিরও কিছু বেশি।