জাপানে একাকী মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অসংখ্য বৃদ্ধ

১৯৮০ সালে প্রথম কোডোকুশি শব্দটি ব্যবহৃত হয় জাপানে। প্রযুক্তিনির্ভর, জনবহুল জাপানে দ্রুত হারে বাড়ছে কোডোকুশি বা একাকী মৃত্যু। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই জাপানের বাস্তব চিত্র।

একটি মার্কিন পত্রিকার সাংবাদিক নোরিমিৎসু ওনিশি বলছেন, এই সব বয়স্কদের সন্তানরা হয় অন্য দেশে বা অন্য শহরে থাকেন। ঘরে পড়ে থাকছেন একাকী বৃদ্ধ মা, বাবা। শেষ বয়সে সঙ্গী খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ফলে একাকিত্ব তাঁদের আরও হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। এই অবস্থায় তাঁরা ঘরের ভিতরেই আরও গুটিয়ে রাখছেন নিজেদের এবং একা একা একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। বেশিরভাগ সময়ই সেই মৃত্যুর খবর অন্যরা জানতে পারছেন, পচা মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বেরলে।

ওনিশি জানান, ১৯৯৭ সালে একটি বহুতলে ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধ এভাবেই একাকী মারা যান। ৩ বছর পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার বাড়ি গিয়ে দরজা ভেঙে বৃদ্ধের কঙ্কাল আবিষ্কার করে।

তার দেহাবশেষও খেয়ে ফেলেছিল পোকারা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছিল, সেই বৃদ্ধের ভাড়া, বা অন্যান্য খরচের হিসেব সরাসরি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হত। সেভিংস ফুরিয়ে যাওয়ার পরই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়ি যান।

৯১ বছরের চিকো ইতো ২৫ বছর আগে ক্যান্সারে ৩ মাসের ব্যবধানে হারিয়েছেন স্বামী এবং মেয়েকে। তিনি যে জীবিত তা বোঝাতে প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘরের জানলার কাচে কাগজ লাগিয়ে রাখেন। সকালে উঠে তা তুলে ফেলেন। প্রতিবেশীকে ইতো বলেছেন, যদি কোনওদিন সেটা তিনি না করেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি মৃত।