অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত : মঠবাড়িয়ায় প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষিকাকে শোকজ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৩৩ নং ওয়াহেদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লাকে শোকজ করা হয়েছে।

ছুটি না নিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে নিজের স্বাক্ষর অন্য একজন সহকারী শিক্ষককে দিয়ে করানোর অভিযোগে তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৮ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার নিকট এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম হায়দার নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা কোন অনুমতি ছাড়াই ২৫ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকেন।তবুও ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর আছে তার। ৩ নভেম্বর সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে এ অনিয়ম দেখতে পান।এ সময় তিনি ৩ দিনের এ জাল স্বাক্ষর লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করেন।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম হায়দার জানান,প্রধান শিক্ষিকার ওই স্বাক্ষরের সাথে মূল স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়নি।অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে অন্য কাউকে দিয়ে এ স্বাক্ষর করানো হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।সরকারি কর্মচারী আচরন বিধি ১৯৭৯ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপযুক্ত কোন কারন ছাড়াই বছরের পর এডহক কমিটি দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করেন প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা। স্লিপ,রটিন মেরামত ও ক্ষুদ্র মেরামতের টাকার কাজ বিল ভাউচারে থাকলেও বাস্তবে সিংহভাগ টাকার কাজই দৃশ্যমান নেই।বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত নেই জমির দলিল। বিদ্যালয়ের নামে কত শতাংশ জমি আছে তাও বলতে পারেন না তিনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা ঢাকায় বসে তার পরিবর্তে সহকারী শিক্ষক হেদায়েত আল মামুনকে (অলি) হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে বলেন।সহকারী এই শিক্ষক ২৫,২৬ ও ২৭ অক্টোবরের প্রধান শিক্ষিকার হাজিরা স্বাক্ষর করেন।এ সময় প্রধান শিক্ষিকার আসল স্বাক্ষরের সাথে জাল স্বাক্ষরের হুবহু না মেলায় তিনি ৩টি স্বাক্ষর করেই থেমে যান।স্কুল চলাকালীন সময়ে তাড়াহুড়া করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেও রিটার্নের স্বাক্ষর ফাঁকাই থেকে যায়।

প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা জানান,হাজিরা খাতায় আমার পরিবর্তে আমি কাউকে স্বাক্ষর করতে বলি নাই।আমাকে হয়রানি করার জন্যই কেউ হয়তো আমার স্বাক্ষর হাজিরা খাতায় দিয়ে রেখেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি জানান, কোন অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা আচরন বিধি লঙ্ঘনের শামিল।বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঊর্মি ভৌমিক জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।