উৎসবমুখর পরিবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত

‘অর্জনে গৌরবে সতেরো’ স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২২ তথা ১৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হয়।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যে ছিল আনন্দ র‍্যালি, বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, শিক্ষা উপকরণ প্রদর্শনী, নাটক পরিবেশনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রকাশনা উৎসব।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এ যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয় পুরো ক্যাম্পাস। সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল সারাদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া উদযাপন চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। কেউ নাচছে কিংবা কেউ গাইছে এভাবে কেটেছে শিক্ষার্থীদের সারাদিন। শিক্ষার্থীদের জন্য এমন আয়োজন করতে পেরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড মোঃ ইমদাদুল হক জানান, আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সবার মাঝে কত আনন্দ শিক্ষার্থীদের জন্য এ আনন্দ উৎসবের আয়োজন কর‍তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সত্যি খুব আনন্দিত।

সারাদিনের টুকরো টুকরো কিছু আয়োজন উল্লেখ করা হলো:-

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন: সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আনন্দ র‍্যালি: এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে ব্যান্ডদলে সুসজ্জিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনন্দ র‍্যালিটি শহীদ মিনার চত্বর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, ভিক্টোরিয়া পার্ক পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শেষ হয়। এসময় ছাত্র- ছাত্রীরা নানা রঙ-বেরঙের টি-শার্ট ও শাড়ি পরে নেচে গেয়ে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, প্রতিটি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ নিজস্ব বিভাগীয় ব্যানারে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে।

নাটকপ রিবেশনা: বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নাট্যকলা বিভাগের উদ্যোগে ‘তাসের দেশ’ নাটক মঞ্চায়িত হয়। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জীব কুমার দে এর নির্দেশনায় নাটকটিতে অভিনয় করেন বিভাগের ৫ম ও ৮ম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।

প্রকাশনী প্রদর্শনী: এছাড়াও ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী প্রকাশনা প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। প্রকাশনা প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ, বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ থেকে প্রকাশিত জার্নাল, শিক্ষকদের প্রকাশিত গ্রন্থ ও অন্যান্য মুদ্রণ উপকরণ স্থান পায়।

শিক্ষা উপকরণ প্রদর্শনী: শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষা উপকরণ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: এরপর বেলা ১২ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্ববধানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দের অংশগ্রহণে মুজিব মঞ্চ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এরমধ্যে নৃত্য, দলীয় সংগীত, নজরুল গীতি, লোক সংগীত উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতাকে সবচেয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে এবার দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ব্যান্ড ও লোক গানের দলের ‘ভবঘুরে’, ‘মনের মানুষ’, ‘ব্লু টাচ’, ‘ট্রাভেলার্স’, ‘মনের মানুষ’, ‘আবোল-তাবোল’, ‘স্প্লবাজি’, এবং ‘ব্ল্যাকলিন্ট’ ব্যান্ডদল দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধারাবাহকিভাবে গান পরিবেশন করছে। এরপর বিশেষ কনসার্টে ছিল দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ‘ওয়ারফেজ’ ও ‘সহজিয়া’। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সকলে উদ্বেলিত ও উৎফুল্ল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সতেরো বছর পূর্তি উদযাপন করে।

এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি কর্তৃক উপাচার্যকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২২ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনসমূহ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।