এক সেতুতে ভোগান্তি ৩ উপজেলার! স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্মাণ হয়নি!

স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও কপোতাক্ষ নদের ওপর সেতু নির্মাণ হলো না। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে দু’পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজারস্ত কপোতাক্ষ নদের উপর তৈরি বাঁশের টলমলে সাঁকোটি।

তিন উপজেলার প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রীর কাছে বাঁশের তৈরি টলমলে ঝুঁকিপূর্ন সাঁকোটি এক আতঙ্ক। জীবিকার তাগিদে এলাকার লোকজন এবং শিক্ষার তাগিদে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় এই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে।

এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, ওই সাঁকোর উপর দিয়ে কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর, সাতবাড়িয়া, ত্রিমোহিনী, চাদড়া, জাহানপুর, কড়িয়াখালী, বেগমপুর, কোমরপোল, মনিরামপুর উপজেলার হাজরাকাটি, ত্রিপুরাপুর, শয়লা, চালুয়াহাটি এবং কলারোয়া উপজেলা খোর্দ্দ, বাটরা, দেয়াড়া, জানখা, নতুনবাজার, গড়ান বাজার, কাশিয়াডাঙ্গা, যুগিখালী, কামারালী সহ ২১ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ ভোটের সময় কপোতাক্ষ নদের উপর দিয়ে সেতু করার অঙ্গিকার করলেও নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে গেলে কেউ খোঁজ করেন না।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও নদের উপর সেতু নির্মানের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র্র ক্ষোভের দানা বেঁধেছে। মানুষের পদভারে ছিন্নভিন্ন এই (খেয়া ঘাটের) কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু না থাকায় মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষিপন্য নিয়ে, কেউবা কাঁদে বেগুনের খাঁচি, কেউবা মাথায় সবজি, কারো কাঁধে ধান, পাট নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে পার হতে হচ্ছে। সময় মত উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যমুল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তাছাড়া পরিবহন খরচও বেশি। গুরুত্বপূর্ন এই সেতুটি নির্মিত হলে কেশবপুর, কলারোয়াসহ অত্র এলাকার লোকজনের জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় সকাল থেকে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে সাঁকো পারা-পার হচ্ছে। করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থকলেও প্রয়োজনের তাগিদে শিক্ষার্থীরা শুধু নয় অভিভাবকদেরও যেতে হচ্ছে। এলাকাবাসি জানান ত্রিমোহিনী বাজারস্ত কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু নির্মান অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ন।
এখানে একটি সেতু নির্মান তাদের প্রাণের দাবী। তারা নিজেদের প্রয়োজনে প্রতিবছর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার করে থাকেন। এই নদের উপর একটি সেতু নির্মান তিনটি উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের দাবী।

কেশবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে দেশের উন্নতি হয়। কপোতাক্ষ নদের উপর সেতুটি নির্মিত হলে কেশবপুর, কলারোয়া ও মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন পেশার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। নদের উপর দ্রুত একটি সেতু নির্মান আমাদের দু’পাড়ের মানুষের চিরদিনের প্রাণের দাবী।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কেশবপুরের সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদার এমপি উন্নয়নমূখী জনদরদী মানুষ। তিনি ওয়াদা করেছিলেন এবং আমরা অত্যন্ত আশাবাদী।