এখনো মেলেনি দুই পাইলটের লাশ, মানুষের ভিড়

যশোরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত দুই পাইলটের লাশ এখনো উদ্ধার সম্ভব হয়নি। সোমবার ভোর চারটায় অভিযান স্থগিত করা হয়। এরপর সোমবার সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।

নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের ২শ’ গজের মধ্যে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিমান, সেনা ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।

এর আগে রোববার রাত নয়টা ২০ মিনিটে যশোরের মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি থেকে একটি প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পর সেটি যশোর সদর উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের বুকভরা বাওড়ের মধ্যে আছড়ে পড়ে।

পরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর আইএসপিআর থেকে জানানো হয়, রোববার রাতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কে-৮ ডব্লিউ নামের একটি বিমান যশোর সদর উপজেলার বুকভরা বাওড়ের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের স্কোয়াড্রন লিডার মো. সিরাজুল ইসলাম এবং স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ নিহত হন।

এদের মধ্যে পলাশ জামালপুরের সরিষাবাড়িয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর শফিউদ্দিনের ছেলে। তার তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। আর সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ফরিদপুর। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

সোমবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আরিচপুর গ্রাম সংলগ্ন বুকভরা বাওড়ে গিয়ে দেখা যায়, হাজারো উৎসুক মানুষ ভিড় করেছেন।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মঠবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আশুতোষ সরকার বলেন, রোববার রাত নয়টার দিকে বাওড়ে মাছ ধরতে এসেছিলাম। বাওড়ের ধারেই ছিলাম। হঠাৎ দেখি দক্ষিণ আকাশে বিকট শব্দে একটি বিমান ব্লাস্ট (বিস্ফোরণ) হলো। এরপর আগুনের গোল্লা বাওড়ের জলে পড়ে। কিছুক্ষণ পর এলাকাবাসী বাওড়ের ধারে ভিড় করে।

রোববার রাত থেকেই বাওড়ের দুই পাড়ে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সোমবার সেটি রীতিমত জনসমাগমে পরিণত হয়েছে। সবার চোখে-মুখে বিষাদের ছায়া।

ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন (৬৫) বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভোরে এসেছি, উদ্ধারকাজ দেখার জন্য। কিন্তু, বিমান বাহিনীর লোকজন আশপাশে যেতে দিচ্ছে না। দূর থেকে উদ্ধার কাজ দেখছি।’

গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা হযরত মোড়ল (৭০) বলেন, ‘বাওড়ের পানিতে প্লেন (বিমান) পড়েছে শুনে এসেছি। রাস্তার পাশে বসে আছি, কিভাবে উদ্ধার করে দেখব বলে।’

আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।