এতকিছুর পরও সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র রুদ্ধদ্বার বৈঠক

সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে চারদিকে সমালোচনা-নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই সোমবার সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাজস্ব সচিব স্টিভেন মুচিন।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সৌদির ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের তরফ থেকে সৌদিকে ব্যখ্যা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সৌদি সফরকে কেন্দ্র করে সমালোচনা আরও তীব্র হচ্ছে।

তুর্কি কর্মকর্তারা বলছেন, গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছিলেন খাশোগি। এরপর তিনি আর বেরিয়ে আসেননি। ওই কনস্যুলেটের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

প্রথমদিকে সৌদির তরফ থেকে খাশোগিকে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। কিন্তু পরে প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে জানানো হয় যে, কনস্যুলেটের ভেতরে জামাল খাশোগি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে নিহত হন। এই ঘটনাকে ভয়ানক ভুল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তারা প্রথমদিকে বলেছিল যে, জামাল খাশোগি কাজ শেষে ওই দিনই কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো সৌদির তরফ থেকে খাশোগির নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করা হয়। ওই ঘটনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, তিনি সত্য ঘটনা প্রকাশ করবেন।

সৌদির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে যে, মুচিন এবং সালমানের ওই বৈঠকে সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। সৌদির রাজধানী রিয়াদে ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

খাশোগি হত্যার ঘটনা প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি আরও বলেন, যা কিছু শুনেছি তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। কিন্তু আমরা যে বিনিয়োগ করেছি তা আমি হারাতে চাই না। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

সৌদির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, খাশোগির হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ক্রাউন প্রিন্স কিছুই জানতেন না। কিন্তু রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, খোশেগিকে কনস্যুলেটে হত্যার আগে তাকে ফোন করেছিলেন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এসময় তিনি খাশোগিকে রিয়াদে ফিরে যাওয়ার কথা বললে খাশোগি ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান।

খাশোগি ধারণা করছিলেন, তিনি রিয়াদে ফিরে গেলে তাকে গ্রেফতার করে হত্যা করা হবে। সালমানের ওই ফোনালাপ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়।

সৌদির তরফ থেকে বলা হয়েছে, খাশোগির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় সন্দেহভাজন ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন প্রিন্স সালমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।