কুড়িগ্রামে ফিল্মি কায়দায় প্রবাসী স্ত্রীর বাড়িঘর ভাংচুর-জমি দখল

কুড়িগ্রামে ফিল্মি কায়দায় জনৈক প্রবাসীর স্ত্রীর জমি দখল ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। ভাংচুরকৃত বাড়িঘরের অবশিষ্টাংশও লুট হয়েছে। দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় বাড়ি ছাড়া ওই পরিবার। থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ এখনো অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারে নাই।

জানা গেছে, (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা সিঙ্গাপুর প্রবাসীর স্ত্রী আকলিমা বেগমের ক্রয়কৃত বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। এসময় রৌমারী উপজেলার হাশেম মাস্টার নামের জনৈক ব্যক্তির নির্দেশে স্থানীয় জিয়া বাজার সমিতির ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শতাধিক বহিরাগত দুর্বৃত্ত ফিল্মি কায়দায় আকস্মিকভাবে হামলা চালিয়ে অসহায় আকলিমা বেগমের বসতবাড়ির দু’টি টিনের ঘর ভাংচুর, নগদ এক লাখ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল, আসবাবপত্র সহ বাড়ির আনুষাঙ্গিক লুটপাট করে এবং অর্ধদিবস পর্যন্ত তাণ্ডবলীলা চালায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুড়িগ্রাম ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আফজাল হোসেন বলেন, ‘বিবদমান বিষয়টি নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সদর থানার ওসি সহ বসার কথা ছিল। কিন্তু বিবাদী পক্ষ অপেক্ষা না করেই জিয়া বাজার সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম এক থেকে দেড়শ’ গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আকলিমার বাড়িঘর ভাংচুর এবং লুটপাট চালিয়েছে। যা বেআইনি ও দুঃখজনক। গ্রামের ভিতরে এসে এরকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আমরা মেনে নিতে পাচ্ছি না।’

গৃহবধূ আকলিমার ভাই মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আকলিমা বেগমের স্বামী বিদেশের থাকার সুযোগ নিয়ে কালাম হোসেন ও হাশেম মাস্টার গং জিয়া বাজার সমিতির সভাপতি শফিকুলকে দিয়ে শহর থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে হামলা চালিয়ে সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। যার সাক্ষী এলাকাবাসী।’

গৃহবধূ আকলিমা বেগম বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর, স্বর্ণলঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সন্ত্রাসীদের তান্ডব দেখে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমি পুলিশের জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে ফোন দিলে পুলিশ এসে ছবি-ভিডিও করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দুর্বৃত্তরা সংগঠিত হয়ে আবারো হামলা ও লুটপাট চালিয়ে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি পরবর্তীতে আবারো ফোন দিলে পুলিশ থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। আমি ও আমার সন্তানসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

জিয়া বাজার সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আকলিমা বেগমের বাড়িঘর লুটপাটের ঘটনায় আমি কোনভাবেই সম্পৃক্ত নই। এসব মিথ্যা এবং বানোয়াট।’

কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র কাজল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছিল, কিন্তু বিবাদীপক্ষ সমাধানের জন্য অপেক্ষা না করে গুন্ডা দিয়ে অসহায় ওই গৃহবধূর বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে শুনেছি। এর সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাসুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ সরেজমিনে ঘটনা তদন্তে কাজ করছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’