কুমিল্লার মুরাদনগরে সিভিল সার্জেনের সার্টিফিকেট চাওয়ায় ইউপি সচিবকে মারধর! আহত-৪

কুমিল্লার মুরাদনগরে জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের সাথে সিভিল সার্জেনের সার্টিফিকেট চাওয়ায় ইউপি সচিবকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সেবা প্রত্যাশী ও ইউনিয়ন পরিষদের লোকজনের মারামারিতে দু’পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছে।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ধামঘর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মোঃ করিম হোসেন তার ছোট ভাই আঃ রহিম, বোন সালেহা বেগম ও ভাগিনা সিয়াম গাজীকে নিয়ে পুরনো জন্ম নিবন্ধন থেকে বয়স বাড়িয়ে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের সার্টিফিকেটসহ একটি আবেদন নিয়ে যায় ইউপি সচিবের কাছে।

এসময় বয়স বেশি হওয়ায় সিভিল সার্জেনের সার্টিফিকেট নিয়ে আসার পরামর্শ দেন ইউপি সচিব নাইম সরকার। তখন সেবা প্রত্যাশী করিম হোসেন ও ইউপি সচিব নাইম সরকরের মধ্যে বাকবিতন্ডা তৈরি হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ইউপি সচিব নাইম সরকারকে ঘুষি মারে করিম হোসেন।

বিষয়টি দেখতে পেয়ে উপস্থিত ইউপি সদস্য রাসেল মিয়া, স্থানীয় লোকজনসহ করিম হোসেন ও তার সাথে থাকা লোকদের কে আটকাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এসময় ইউপি সদস্য রাসেল মিয়া, স্থানীয় আরাফাত চৌধুরী, সেবা প্রত্যাশী করিম হোসেন তার ছোট ভাই আহত হয়।

ধামঘর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব নাইম সরকার বলেন, করিম হোসেন আমার কাছে কয়েকটি আবেদ নিয়ে আসে। তখন সেখানে দেখি সবারই বয়সের সমস্যা আমি তাকে নিয়ম অনুযায়ী কুমিল্লা সিভিল সার্জেনের সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে বললে সে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়ে আসা সার্টিফিকেন নিয়ে আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায় সে আমাকে ঘুষি মারে, তখন ইউপি সদস্য রাসেল মিয়াসহ উপস্থিত সেবা প্রত্যাশীরা আমাকে বাচাতে আসলে তাদের কেউ মারধর করে করিম হোসেন ও তার লোকজন।

তবে সেবা প্রত্যাশী করিম হোসেন বলেন, নানা অযুহাতে আমাকে তিন মাস ঘুরানোর পর আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্টিফিক সহ আবেদন নিয়ে গেলে সচিব সাব আমারে জানায় কুমিল্লা থেকে কাগজ আনতে হবে। তখন আমি উনার কাছে জনতে চাই আর কোন কাগজ লাগবে কি না। তিনি কোন উত্তর না দিয়ে আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেরে নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে রাসেল মেম্বার আমাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায় আমি গিয়ে সবিচ সাবের উপরে পরি। আমি উনাকে মারধর করিনি। এসময় রাসেল মেম্বার ও তার লোকজন আমার মাথা ফাটানো সহ ছোট ভাই, বোন, ভাগিনাকে আহত করে।

ধামঘর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, আমি আমার রুমে বসে জন্ম নিবন্ধনের কাগজে স্বাক্ষর করছিলাম। পরে শুনি করিম হোসেন কোন প্রকার সিরিয়াল না মেনে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে সচিবের সাথে বাকবিতন্ডা করছে। এক পর্যায় সে সচিবের গায়ে হাত তুললে সেখানে থাকা সেবা প্রত্যাশীরা তাদেরকে আটকানোর চেষ্টা করে। তাদের কে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে মারধর করেনি।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।