কুমিল্লায় তনু হত্যা; পাঁচ বছরেও অধরা খুনিরা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে শনিবার।
কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে গত পাঁচ বছরেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে তনুর খুনিরা।

এদিকে হত্যাকান্ডের পাঁচ বছর পূর্তিতে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে গ্রামের বাড়ি মুরাদনগরের দুই মসজিদে দোয়ার আয়োজন করেছে পরিবার।

সূত্র জানায়, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেনের সাথে দেখা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করে ঢাকায় ফিরে যান। মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর গত ১৫ নভেম্বর তনুর বাবা ক্যান্টনবোর্ড বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেনকে নিয়ে হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার স্থল ও তনুদের পুরোনো বাসভবন পরিদর্শন করে পিবিআই। সর্বশেষ গত দুইমাস পূর্বে পুনরায় তনুর মা-বাবার সাথে কথা বলে পিবিআই। ওই সময় খুনিদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে তনুর পরিবারকে আশ্বস্ত করে পুলিশ।

পিবিআই দায়িত্ব পাওয়ার আগে তিনবার মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও চারবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হয়। তনুর মায়ের ইচ্ছানুযায়ী সন্দেহভাজন সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। তবে পুলিশের অন্য তদন্তকারী দল সার্জেন্ট জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম।

তিনি জানান, ‘সার্জেন্ট জাহিদকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এতদিনে হত্যার সাথে সম্পৃক্তরা ধরে পড়ে যেতো। আমি আশাহত। আল্লাহ যদি বিচার করে, তাহলে বিচার পাবো। আমি অন্য কারো ওপর আস্থা রাখতে পারছি না।’

এ ব্যাপারে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, ‘আমরা খুব গুরুত্বের সাথে মামলাটি তদন্ত করছি। তবে এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে ঝোপের মধ্যে তনুর লাশ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত ও তনুর জামায় পাওয়া সিমেন নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে ধারণা করে সিআইডি। হত্যাকান্ডের পরদিন অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন।