চুয়াডাঙ্গায় ছাত্র বহিস্কার-শাস্তি না হলে জাতির জন্য ভয়ংকর: মানববন্ধনে শিক্ষকরা

পুরো জাতির ভবিষ্যৎই গড়ে দেন একজন শিক্ষক। যার অনুপ্রেরণায় মানবিক, বিবেকবান, সামাজিক গুণাবলীসহ সুচরিত্র গঠনের মধ্যদিয়ে বেড়ে ওঠে একজন শিক্ষার্থী। অথচ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্কুলেই শিক্ষার্থীদের উচ্ছৃঙ্খলা মারাত্মক হারে বেড়ে উঠেছে। প্রায় প্রায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রকাশ পাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গার সুনামধন্য ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাইফুল আমিন শীর্ষ নামের দশম শ্রেণীর উচ্ছৃঙ্খল ওই ছাত্র শিক্ষকের গালে চড়-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে এক ঘণ্টা ক্লাস বর্জন করে কর্মসূচী পালন করেন শিক্ষকরা।

পরে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা এবং পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেসময় ডিসি এসপির আশ্বাসে ক্লাসে ফিরে যায় শিক্ষকরা। বর্তমানে স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে, শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় আজ দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ছাত্রের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। বেলা ১২টার দিকে ওই ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে চুয়াডাঙ্গা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে এসে মানববন্ধন করেন তারা।

সেসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারা শিক্ষার্থীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে এ রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জানিয়ে বলেন, এই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে এরকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। যার পরিণাম হতে পারে পুরো জাাতির জন্য ভয়ঙ্কর।

চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান জানান, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং আইনের আওতায় আনতে হবে তা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাব্বুর রহমান জানান, এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ৩৩২, ৩৫৩ এবং ৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

উল্লেখ্য-গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় এসএসসি পরীক্ষার নির্বাচনী পরীক্ষা চলছিল ভি.জে স্কুলের ১১২ নং কক্ষে। ওই কক্ষে পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বিদ্যায়েরর বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান। সেসময় পরীক্ষার হলে বিশৃঙ্খলা ও অসুদপায় অবলম্বনের অভিযোগে পরীক্ষার্থী দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল আমিন শীর্ষের খাতা কেড়ে নেন শিক্ষক। এতে শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে বাক বিতÐা হয়। এর একপর্যায়ে শিক্ষক হাফিজুরকে চড়-থাপ্পড় মারে ছাত্র শীর্ষ। অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে পরীক্ষার হল। শিক্ষক মারধরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে, এ ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।