টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত

রাজধানীর সন্নিকটে কহরদরীয়া খ্যাত টঙ্গী তুরাগ নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ময়দান মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত। তুরাগ নদের পশ্চিম তীরে বেশ কিছু এলাকাজুড়ে মুসল্লিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানেও মুসল্লিরা অবস্থান নিয়ে বয়ান শুনতে পারবেন। টুকিটাকি কিছু কাজ রয়েছে, তা আজ-কালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আর মাত্র দুইদিন পর আগামী শুক্রবার শুরু হবে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন।

৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আগেই মুসল্লিরা ময়দানে অবস্থান নেবেন। এবার ময়দানের বেশ কিছু অংশে শামিয়ানা টানানো হয়নি। এসব স্থানে মুসল্লিরা জেলাওয়ারী খিত্তায় অবস্থান নিয়ে শামিয়ানা টানিয়ে নেবেন। ইজতেমাকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা ময়দানের বাইরে দ্বিনের দাওয়াতে সময় পার করছেন। ইজতেমা শুরু হলে ময়দানে প্রবেশ করবেন। তিন দিনের ইজতেমা শেষে চিল্লাধারী সাথীরা এক চিল্লা, দুইচিল্লা, এমনকি তিন চিল্লায় দ্বিনের মেহনতে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বেন।

এবারের বিশ্ব ইজতেমা আগামী শুক্রবার শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উভয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।

আগত মুসল্লিরা জেলাওয়ারী খিত্তায় অবস্থান নেবেন। প্রতিবছরের মতো এবারও উর্দু ভাষায় বয়ান করবেন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ও আররি ভাষায় তর্জমা করা হবে। ময়দানের উত্তর পশ্চিমে তৈরি হয়েছে বয়ান (মেম্বর) মঞ্চ এবং পশ্চিমপ্রান্তে কামাড়পাড়া বিজ্র সংলগ্ন বিদেশি মেহমানদের থাকার ঘর। আগত মুসল্লিদের নদী পারাপারের জন্য সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচটি ভাসমান (পল্টুন) সেতু।

এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে ১৩ জোড়া বিশেষ ট্রেন ও বেশ কিছু বিশেষ বাস চলাচল করবে। ময়দানের আশপাশ এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাট ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান হয়নি এখনো, এমনকি ময়দানের পাশে অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে। ফলে ময়দানে আসা মুসল্লিদের অতিরিক্ত দাম দিয়ে বিভিন্ন পণ্য কিনতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন মুসল্লিরা।

আয়োজক কমিটির এক সূরা সদস্য ডা. সাহাবুদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় সব কাজ শেষ হয়েছে। ইনশাল্লাহ আগামী শুক্রবার আলমী সূরার ইজতেমা শুরু হবে। রবিবার দুপুরের আগে যে কোনো সময় আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আশা করি সফলভাবেই ইজতেমা শেষ হবে।

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এবারের বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে আগত মুসল্লিদের সেবায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে ইজতেমা ময়দান। এবারের ইজতেমা বাস্তবায়নে পুলিশের পাশাপাশি গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসক, ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিভাগ কাজ করছে। মাঠের নিরাপত্তায় পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, সিআইডি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।