ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারালেন ৯ প্রার্থী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও জেলার সংসদীয় তিনটি আসনে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী সংসদীয় ঠাকুরগাঁও-১ আসনে চারজন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে তিনজন ও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে দুজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট পেতে হবে। সে হিসেব অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলার সংসদীয় তিনটি আসনে ৯জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও জেলার সংসদীয় তিনটি আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪ জন। এদের মধ্যে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে পাঁচজন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে পাঁচজন ও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে চারজন।

এদের মধ্যে দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে ১০ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে চারজন।

ঠাকুরগাঁও-১: ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ৫জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৪জন প্রার্থী। এই আসনের ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৫৯৪টি। এর মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার ৩১৩ ভোট পেয়ে পঞ্চমবারের মতো এই আসনে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী ১৩ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এছাড়াও ইসলামী ঐক্যজোটের মিনার প্রতীকের প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম ৩ হাজার ৪৯৬ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী মো. রাজিউল ইসলাম ১ হাজার ৯ ভোট ও স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী তাহমিনা আক্তার মোল্লা ৬ হাজার ৮৬৩ ভোট জামানত হারিয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও-২ ঠাকুরগাঁও-২ আসনে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৩জন প্রার্থী। এই আসনের ১০৪টি ভোটকেন্দ্রের মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৬টি। এর মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী যুবলীগ নেতা আলী আসলাম জুয়েল ৫৭ হাজার ২৩৫ ভোট পেয়ে তিনি জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। তবে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোছা. নুরুন নাহার বেগম ১ হাজার ৯৮৬ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী মোছা. রিম্পা আক্তার ৪২৬ ভোট ও স্বতন্ত্র সোফা প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের ৩ হাজার ২১৩ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। ঠাকুরগাঁও-৩: ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ৪জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ২জন প্রার্থী। এই আসনের ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮২৭টি। এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৭১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতুড়ি প্রতীকের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী গোপাল চন্দ্র রায় ৬৪ হাজার ৮২১ ভোট পেয়ে জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। তবে বিকল্পধারা বাংলাদেশের কুলা প্রতীকের প্রার্থী এসএম খলিলুর রহমান সরকার ৬০৯ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন এবং ১ হাজার ৬৮৩ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী আশা মনি।

উল্লেখ্য ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও জেলার সংসদীয় তিনটি আসনের ৫৪টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা মিলে মোট ৪১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৩টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৮ ও মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৬৩ হাজার ২৮১ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজরা) ভোটার ৪ জন।