দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রতারণার অভিযোগে আটক ১

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে খাদিজা ফাউন্ডেশন প্রাঃ চিকিৎসা কেন্দ্র নামে ভূয়া চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান খুলে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ তাফহিমুল হোসাইন (৪৫)নামে একজনকে রবিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে আটক করেছে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মোঃ তাফহিমুল হোসাইন ২০০৪সালে স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণা মামলা চলামান রয়েছে এবং একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী বলে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

সে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামের মোঃ ইরফান আলীর ছেলে হিসেবে দাবী করলেও প্রতিষ্ঠানের নামে সংগৃহীত ফায়ার লাইসেন্স কপিতে ঠিকানা টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিন পাড়া গ্রাম উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, আনুমানিক দুই মাস পুর্বে উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের কোঙরপুর গ্রামে খাদিজা ফাউন্ডেশন প্রাঃ চিকিৎসা কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেন। বিজ্ঞাপন অনুযায়ী চাকুরী প্রার্থীরা আবেদন করার পর প্রতিষ্ঠান মালিক মোঃ তাফহিমুল হোসাইল ৬১জন আবেদনকারীর নিকট ৩০হাজার টাকা জামানত স্বরুপ গ্রহণ করেন।

জামানতের টাকা ৮মাস পর ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেওয়া চেকের বিপরীতে ব্যাংকের হিসাব নম্বরে কোন টাকা না থাকায় বিষয়টি চাকুরীরত অনেক সদস্যের সন্দেহ হয়। পরে তারা বিষয়টি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য মোঃ মনোয়ার হোসেনকে জানায়। মোঃ মনোয়ার হোসেন বিষয়টি রবিবার সকালে উপজেলা প্রসাশনকে অবহিত করলে প্রশাসন তাৎক্ষণিক ভাবে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী বীরগঞ্জ পৌর শহরের মোঃ আলাউদ্দিনের ছেলে মোঃ নুরনবী ইসলাম বলেন, চাকুরী দেওয়ার পর ৩০হাজার টাকা জামানত হিসেবে দিয়েছি। প্রশিক্ষণ শেষে প্রথম ৩মাস ৫হাজার টাকা এবং পরে ১০হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া কথা। কিন্তু জামানতের বিপরীতে চেক দেওয়ার কথা থাকলেও চেকের পাতা নেই বলে আমাদের কাছে ষ্টাম্প নিয়েছে জামানতের বিষয়ে উল্লেখ করে চুক্তি নামা লিখে দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চুক্তিনামা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি।

বীরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মারফত বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের পক্ষে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে দেখা যায় বিভিন্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সময় তিনি বিভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করেছে। তদন্তে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয় তিনি একজন প্রতারক। পরে বিভিন্ন জেলায় খোজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কিছু প্রতারণা মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। এরমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় ৩টি মামলা চলমান এবং একটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং সেনাবাহিনীতে ২বছর চাকুরী করেছেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক ভাবে প্রতিষ্ঠানের মালিককে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আসার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানের মালিক কাগজ পত্র নিয়ে আসার পত্র তা যাচাই বাচাই করে অসংগতি পাওয়া যায়।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিয়মান হয় তিনি একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণার মামলা রয়েছে এবং তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।