পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বর্তমান মেয়রকে পেটালেন সাবেক পৌর মেয়র

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক মেয়র বারেক মোল্লার বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাত সাতটার দিকে পর্যটন মোটেল ও কুয়াকাটা এসি মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মেয়র আনোয়ার সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কিন্তু হামলার পর পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে পুলিশ। তবে আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নেতাকর্মীরা বলছেন, পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুইগ্রুপে ব্যক্তিগত ক্ষোভ এবং আনোয়ার হাওলাদার’র বিএনপি পন্থীদের সাথে সম্পর্ক থাকার জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এখানে আওয়ামী দলীয় কোন বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে পর্যটন মোটেলে যান পটুয়াখালী—০৪ আসনের এমপি মো.মহিব্বুর রহমান। এসময় পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র বারেক মোল্লা এবং তার সমর্থকরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারকে সমাবেশ স্থলে দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে তার উপর হামলা চালান কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি বারেক মোল্লা সহ বেশ কয়েকজন। তবে পরিস্থিতি শান্ত করে সমাবেশ চালিয়ে যান এমপি মহিব। পরে আনোয়ার হাওলাদার সমাবেশ স্থল থেকে বেড়িয়ে এসে কুয়াকাটার এসি মসজিদের সামনে আসলে ফের তার উপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র ও সাবেক জাপা নেতা আনোয়ার হাওলাদার জানান, আমি সমাবেশ স্থলে ঢোকার পরই এমপি মহোদয়ের সামনে বারেক মোল্লা, আনসার মোল্লা ও মাসুদ মোল্লা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমি কিছু না বলেই চুপচাপ চলে আসি। পরে ফের এসি মসজিদের সামনে এসে মোশারেফ মোল্লার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন আমার উপর হামলা চালায়। এতে আমি সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি অনেক আগে জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে প্রায় ৩ হাজার লোক নিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছি। আমাকে অবশ্য আওয়ামীলীগের সদস্য পদ দেওয়া হয়নি। পরে আমি স্বতন্ত্র থেকে মেয়র হওয়ার পর গত বছর ফের বরিশাল আওয়ামীলীগের কর্নধর হাসনাত ভাই ডেকে নিয়ে আমাকে আওয়ামীলীগে যোগদান করিয়েছে। আমার অপরাধ হলো আমি কেন আওয়ামীলীগের মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহন করি। এ কারনেই আমার উপর হামলা করা হয়েছে। আমি আওয়ামীলীগের উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে বিষয়গুলো অবহিত করেছি।

কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বারেক মোল্লা জানান, আমরা প্রতিদিনই বিএনপি ও জামায়াতের অবরোধ বিরোধী মিছিল মিটিং করে আসছি। এসব মিটিংয়ে কখনো আনোয়ার হাওলাদার যোগদান করেনি। এছাড়া যারা বিএনপির লোকজন ঢাকার ২৮ তারিখের বিএনপির হরতাল এবং অবরোধ কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেছে এসকল সন্ত্রাসীদের নিয়েই আনোয়ার চলাফেরা করে। আজ আওয়ামীলীগের সমাবেশে আনোয়ারকে দেখতে পেয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী একটু ক্ষেপে যায়। পরে সে এখান থেকে চলে গেছে। এছাড়া আর তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। সে যে অভিযোগ করছে তা সব মিথ্যা এবং বানোয়াট।

পটুয়াখালী—০৪ আসনের সংসদ সদস্য মো.মহিব্বুর রহমান জানান, আসলে এটা একটি স্থানীয় রাজনৈতিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যার সাথে দলীয় কোন সম্পৃক্ততা নেই।

মহিপুর থানার ওসি ফেরদৌস আলম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে আছে। এঘটনায় কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ আসতে পারে।