পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগে ৫ শতাধিক কবুতরসহ বন্যপাখির মৃত্যু

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে ৫০০ শতাধিক কবুতরসহ বেশ কিছু প্রজাতির বন্যপাখির মৃত্যু হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ওই এলাকার একাধিক প্রান্তিক কবুতর খামারীরা।

বোরিবার উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বর্তমানে কবুতর প্রেমীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষক মেহেদী শেখ তার খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। গত বছরও ওই এলাকার কৃষি ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে বেশ কিছু কবুতর মারা পড়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তবে এ ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্য ও বন বিভাগের সদস্যরা।

ভূক্তভোগী খামারী মেসকাত জানান, সরকারী মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ওনার্স কলেজের শিক্ষার্থী তিনি। কিন্তু বেশ কিছু কবুতর পালন করেন। শনিবার সকালে প্রায় ৪২ টা কবুতর তার খামার থেকে ছেড়ে দিয়েছেন। দুপুর বারোটার দিকে বাড়ি এসে দেখতে পান তার ২২ টা কবুতরের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, আমার বাড়ির পেছনে ডাল চাষ করেছেন মেহদী শেখ৷ তিনি ক্ষেতে ধানের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন। যাতে কোন পাখি বা কবুতর ক্ষেতে না বসে। তার ক্ষেত থেকে কবুতর বাড়িতে আসার পরই মৃত্যু হয়। শুধু আমার কবুতরই নয় এই এলাকার অনেক কবুতর সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়েছে। একই এলাকার অপর কবুতর খামারী ইব্রাহিম জানান, গতকাল আমার খামারের ১০ টি কবুতর মারা গেছে। মারা যাওয়া অনেক কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন এই বাচ্চা কবুতরের অবস্থাও করুন। আমি অনেক লোকসানে পরে গেলাম। মেহেদীর খেতের ডাল খেয়েই এসব কবুতরের মৃত্যু হয়েছে। তবে ক্ষেতে বিষ দেয়ার আগে আমাদের জানালে আমরা কবুতর গুলো আটকে রাখতাম। এছাড়া ঘুঘু ও শালিক সহ বিভিন্ন বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন মনির, সবুজ ও ছালেক সহ অনেক কবুতর খামারী।

এবিষয়ে জানতে চাইৱে মেহেদী শেখ তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তিনি নিজেও কবুতর পালন করেন বলে জানান।
এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার রাকায়েত আহসান জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপাখি ও কবুতর মৃত্যুর সত্যতা পেয়েছি। বন বিভাগকে খবর দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করেছি। আশা করছি তারা ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে সচেতন হবে।

কলাপাড়া বন বিভাগের সদস্য নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কামরুল আলম জানান, আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি বেশ কয়েকজন খামারীর কবুতর মারা গেছে। এছাড়া কিছু বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে এবং একজন কৃষককে অভিযুক্ত করেছেন এই এলাকার খামারীরা। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।