পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি পণ্য বিতরণে অনিয়ম

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৬ নং টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিতরনে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

একাধিক টিসিবি কার্ডধারীরা জানান,ইউপি চেয়ারম্যান রিপন জোমাদ্দার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে তার পছন্দের লোক ও মেম্বারদের মাধ্যমে স্লিপ দিয়ে টিসিবির পণ্য বিতরন করেছেন।এতে অনেক বৈধ কার্ডধারী টিসিবি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে এ অনিয়মের চিত্র দেখা যায়।টিসিবি পন্য বিতরনের অবৈধ স্লিপের মধ্যে অধিকাংশ স্লিপেই দেখা যায় আসমা নামে এক মহিলা মেম্বারের স্বাক্ষর।দেখা যায়,একজন উপকারভোগীর নাম পরিবর্তন করে অন্য একজনকে স্লিপ দেওয়ার চিত্রও।

বড় শিঙ্গা গ্রামের সবুজ নামে একজন উপকারভোগী জানান,আমি ২/৩ বার টিসিবি পন্য পাওয়ার পর আমার কার্ডটি ইউনিয়ন পরিষদে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।এরপর আমি ৩ বার পরিষদে গিয়েও পণ্য পাইনি।এ পর্যন্ত আমি ৭/৮ মাসের টিসিবি পণ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শিপলু মেম্বার জানান, আজকের যে টিসিবি পণ্য বিতরন করা হবে তা আমাকে জানানো হয় নি।এছাড়া আমার এলাকার অনেক উপকারীভোগীকেও জানানো হয়নি।

মহিলা মেম্বার আসমা বেগম জানান,আমাদের ইউনিয়ন চেযারম্যান যাদেরকে স্লিপ দিতে বলছে তাদেরকেই স্লিপ দিয়েছি।

টিসিবি পণ্য বিতরনে ইউনিয়ন ডিলার মোঃ জুয়েল জানান,টিকিকাটা ইউনিয়নে মোট ১৪৪৩ জন কার্ডধারী রয়েছে। এরমধ্যে উপস্থিত না হওয়ায ২৮৮ জনের পণ্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে রাখা হয়েছে।কার্ডধারীদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জন লোক স্লিপের মাধ্যমে পণ্য নিয়েছে।

টিসিবি পণ্য নিতে আসা উপকারভোগীদের নিকট থেকে ইউনিয়ন পরিষদে কার্ড জমা নেওয়া হয় কেন-এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর গৌতম কুমার বিশ্বাস।এছাড়াও কার্ডের পরিবর্তে স্লিপের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ এক ধরনের অনিয়ম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।তবে দুই একটি কার্ড হারিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে স্লিপ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার যোগ্য।

ইউপি চেয়ারম্যান রিপন জোমাদ্দার জানান, টিসিবি পণ্য ডিলার বিতরন করে।এটা মেম্বার চেয়ারম্যানদের কাজ না।এজন্য টিসিবি পণ্য কবে কখন বিতরন হবে তা সকল মেম্বারদের জানাতে আমি বাধ্য নই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূম জানান,উপকারভোগীদের কার্ড উপকারভোগীদের কাছেই থাকবে।ইউনিয়ন পরিষদে কার্ড জমা রাখার কোন নিয়ম নেই।হারানো ব্যাতিরেকে অবৈধভাবে কাউকে স্লিপ দেওয়া হলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেওয়া হবে।