বাংলাদেশের সঙ্গে আত্মীয়তা যেভাবে ম্যাককেইনের

সদ্য প্রয়াত মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন (৮১) রাজনীতি অঙ্গনের বাইরে পরিবারেও ছিলেন একজন মহীরুহ।

এ কারণে একজন ‘ফ্যামিলিম্যান’ অর্থাৎ পরিবারের প্রতি নিবেদিত প্রাণ এক স্বামী এবং বাবা হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। খবর বিবিসির।

আর সেই সংযোগ তাকে দিয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে এক মানবিক আত্মীয়তার সম্পর্ক। তার সাত সন্তানের একজন বাংলাদেশি মেয়ে। নাম তার ব্রিজেট ম্যাককেইন।

ম্যাককেইনের স্ত্রী সিন্ডি ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে সফরে এসেছিলেন। সেই সময় ঢাকায় মাদার তেরেসার এক অনাথ আশ্রমে তিনি ১০ সপ্তাহের এক শিশুকে দেখতে পান, যার মাড়ি ও ঠোঁট এমনভাবে কাটা ছিল যে সে ভালোভাবে খেতে পারত না।

এ দৃশ্য দেখে মিসেস ম্যাককেইন তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে, মেয়েটিকে তিনি দত্তক নেবেন এবং তার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

মিসেস ম্যাককেইনের একজন সহকারী ওয়েস গালেট জানান, ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিসেস ম্যাককেইনকে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ দেন-দরবারও করতে হয়েছিল।

সিন্ডি ম্যাককেইন যখন মেয়েটিকে নিয়ে অ্যারিজোনার ফিনিক্স বিমানবন্দরে এসে নামেন, তখন জন ম্যাককেইন জানতে চান, ‘মেয়েটিকে নিয়ে এখন যাবে কোথায়?’ মিসেস ম্যাককেইন জবাব দিলেন- ‘কেন আমাদের বাড়িতে।’

সেদিন জন ম্যাককেইনের যে মুখ আমি দেখেছিলাম সেটি একজন সিনেটরের মুখ ছিল না- ছিল একজন বাবার। একজন দয়ালু মানুষের।

আমেরিকায় পৌঁছানোর পর ব্রিজেটের মুখে অনেক অপারেশন করা হয় এবং তার ঠোঁট ও মাড়ির কাটা অংশ জোড়া লাগানো হয়।

উল্লেখ্য, মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন (৮১) গত এক বছর ধরে ব্রেইন ক্যান্সারে ভোগে গত শনিবার রাতে মারা যান।

রিপাবলিকান পার্টির হয়ে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ছয়বার মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটে নির্বাচিত হন তিনি।