চাচি ও চাচাতো বোন গ্রেপ্তার

মাদারীপুরে অপহরণের ৩ দিন পর বালু চাপা দেয়া শিশুর লাশ উদ্ধার

মাদারীপুরের শিবচর থেকে অপহরণের ৩ দিন পর কুতুবউদ্দিন (২ বছর ৪ মাস) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জেলার সীমান্তবর্তী শরীয়তপুরের জাজিরার এলাকার চাচার বাড়ির ভবনের নির্মানাধীন টয়লেটের মেঝের নীচ থেকে বালু চাপা দেয়া অবস্থায় ওই শিশুর লাশ পাওয়া যায়।

শিশুটির বড় চাচী নার্গিস আক্তারের পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে লাশটি উদ্ধার করেছে।

নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় চাচী নার্গিস আক্তার ও চাচাতো বোন হাফসা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

স্থানীয়, পারিবারিক ও মামলার সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার ওহাব বেপারীর বড় ছেলে আবুল হোসেন বেপারীর মৃত্যুর পর থেকে তার স্ত্রী নার্গিস বেগম দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে মাদারীপুরের সীমান্তবর্তী শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা এলাকাতে সেখানে বসবাস করেছেন। পারিবারিক ও জমি-জমা নিয়ে নার্গিসের শ^শুড় বাড়ির সাথে বিরোধ চলে আসছিল।

নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার (১৪) মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তার দাদা বাড়িতে বেড়াতে আসে। পরদিন বুধবার সকালে হাফসার চাচা ইসমাইল বেপারীর স্ত্রী ময়না বেগমের কাছ থেকে তার একমাত্র সন্তান কুতুবউদ্দিনকে কোলে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে সেখানে থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে ফেরত না আসায় খোঁজ করতে থাকেন তার মা-বাবা। শেষ পর্যন্ত কোথাও না পেয়ে হাফসাদের বাড়িতে গিয়ে সেখানে তাদের কাউকে না পেয়ে অভিযোগ দেন শিবচর থানায়।

অভিযোগের ভিত্তিতে শিবচর থানার পুলিশ একটি মাদ্রাসার সিসিটিভি দেখে নিশ্চিত হয়ে থাকেন হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে তার মা নার্গিসের কাছে যায়। শিশুটিকে নার্গিস কাপড়ে ঢেকে সরে পড়েন। পরবর্তীতে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায় নার্গিস তার ঘরের ভেতরের মধ্যে নির্মানাধীন টয়লেটের মাটির নিচে শিশুটিকে পুঁতে রাখা হয়েছে তিনি জানায়। পরে পুলিশ নার্গিসকে নিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে তার ঘরের টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে রাখা অবস্থায় কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত কুতুবউদ্দিনের চাচা, মুছা বেপারী বলেন, আমার ভাই (আবুল হোসেন) মারা যাওয়ার পরে আমার মরহুম ভাইয়ের বউ, বাচ্চাদের খোঁজ খবর নেই। টাকা পয়সাও দেই। কিন্তু আমার ভাবী ও ভাইয়ের মেয়ে আমার ভাতিজাকে খুন করেছে। আমি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত বিচার চাই।

শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাদ জানান, ঘটনার পরে শিশুটির বাবা আমাদের জানালে আমি শিশুটিকে উদ্ধার করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই। গতকাল বিকেলে আমরা দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে শরিয়তপুরের নাওডোবা এলাকার একটি টয়লেটের নিচে মটির নিচে পুঁতে রাখা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করি। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এব্যপারে থানায় একটি মামলা প্রক্রীয়াধীন।